ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়েও পারল না বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
স্বল্প পুঁজি নিয়ে লড়েও পারল না বাংলাদেশ .

টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষ দলের বিপক্ষে মাত্র ১৪১ রানের সংগ্রহ, সেটাও তাদেরই মাটিতে। তারপরও বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত পৌঁছালো। কিন্তু আক্ষেপ হয়ে রইল ওই ব্যাটিংটাই। অন্যদিকে শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ শোয়েব মালিকের ব্যাটে ভর করে জয় ছিনিয়ে নিল পাকিস্তান।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

টানা পাঁচ ম্যাচ পর জয়ের স্বাদ পেল দলটি আর সিরিজে এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।

পাকিস্তান ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হেনেছিলেন বাংলাদেশের শফিউল ইসলাম। স্বাগতিক দলের ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ওপেনার ও অধিনায়ক বাবর আজমকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন টাইগার পেসার। বাবর যদিও রিভিও নিয়েছিলেন, কিন্তু মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।

এরপর মোহাম্মদ হাফিজ আর অভিষিক্ত আহসান আলী মিলে ইনিংস মেরামত করছিলেন। তবে নিজের দ্বিতীয় ও পাকিস্তানের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে অভিজ্ঞ হাফিজকে বিদায় করে জুটি ভেঙেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। শর্ট এক্সট্রা কাভারে দাঁড়ানো আমিনুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে হাফিজের ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ১৭ রান।

হাফিজের বিদায়ের পর হাল ধরেছিলেন মালিক ও আহসান। তবে আহসানকে বেশি দূর যেতে দেননি আমিনুল। এরপর ইফতিখার আহমেদকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মালিক। দুজনের জুটিতে আসে ২৬ রান।  

দলকে ১১৭ রানে রেখে শফিউলের বলে যখন ইফতিখার বিদায় নেন, তখনও জিততে হলে ২৪ রান দরকার পাকিস্তানের। কিন্তু মালিক তখনও দলের কাণ্ডারি হয়ে ক্রিজে ছিলেন। মাঝে ৫ রান করে আল-আমিন হোসেনের বলে ইমাদ (৬) বিদায় নেন।  

কিন্তু দাঁত কামড়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি খুলে ফিফটি তুলে নেওয়া মালিক ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। তিন বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করার সময় মালিক অপরাজিত ছিলেন ৫৮ রান নিয়ে। ৪৫ বল দীর্ঘ এই ইনিংসটি ৫টি চারে সাজানো। মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৫ রান নিয়ে।

বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন শফিউল। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর, আল-আমিন ও আমিনুল।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ।

শুরুতে দেখেশুনে খেলতে গিয়ে ভালো সংগ্রহ গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ নাঈমের ওপেনিং জুটিতে বড় রান এলেও পরে ওই স্লো ব্যাটিংয়ের ধাক্কা সামলাতে পারেননি বাকিরা। ফলে ৫ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সামনে ১৪২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিতে পেরেছে সফরকারীরা।

ব্যাটিংয়ে নেমে নতুন রেকর্ড গড়েন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের মালিক এতদিন ছিলেন সাকিব আল হাসান। এখন সেই রেকর্ডের মালিক টাইগার ওপেনার তামিম।

৭৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সাকিবের সংগ্রহ ১৫৬৭ রান। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং করতে নেমে ব্যক্তিগত ১৪ রানে ব্যাট করার সময় সাকিবকে ছাড়িয়ে গেছেন তামিম। এজন্য সাকিবের চেয়ে ৪ ম্যাচ কম খেলেছেন তিনি।

নাঈমের সঙ্গে ৭১ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে রান আউটের খাড়ায় পড়ে বিদায় নেন তামিম। এর আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৪ বলে ৩৯ রানের ইনিংস। ৪টি চার ও ১ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংস।

তামিমের বিদায়ের পর লিটন আর নাঈম মিলে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এক রানের জায়গায় দুই রান নিতে গিয়ে বোলার ইমাদের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায় নেন লিটন। এক বল পরেই ৪১ বলে ৪৩ রান করা নাঈমও বিদায় নেন। ৩টি চার ও ২ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংস।

নাঈমের বিদায়ের পর কার্যত বাংলাদেশের রানের চাকা অনেকটা থমকে যায়। এর মধ্যে আফিফ হোসেন (৯) বোল্ড হয়ে পাকিস্তানি পেসার হারিস রৌফকে অভিষেক উইকেট উপহার দিয়ে আসেন। এরপর শাহিন শাহ আফ্রিদির বল সৌম্য সরকারের (৭) লেগ স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেয়।

শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ’র হালকা ঝড়ে মাঝারি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটে ওই ওভারে আসে ১৩ রান। ১৪ বলে ১৯ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। আর মিঠুন অপরাজিত থাকেন ৫ রানে।

বল হাতে পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদি, হারিস রৌফ ও শাদাব খান ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।

ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।