বিসিবির এক বিবৃতিতে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দি চৌধুরী সুজন বলেন, টনি লুইস এমন একটি পদ্ধতি দিয়ে ক্রিকেটের খেলায় বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন যা আবহাওয়া-বিঘ্নিত খেলাগুলি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিখুঁত হিসাবে বিবেচিত হয়। তার অবদান চিরকালের জন্য স্মরণ করা হবে।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে গাণিতিক হিসেব-নিকেশের জন্য সতীর্থ গণিতবিদ ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থকে নিয়ে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন টনি লুইস। তাদের উদ্ভাবিত ফর্মুলা দিয়ে বৃষ্টি-বিঘ্নিত ক্রিকেট ম্যাচে যারা পরে ব্যাটিং করবে তাদের লক্ষ্য কত হতে পারে সেটি বের করা হয়।
১৯৯৯ সালে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে ডি/এল পদ্ধতি কার্যকর করে। তবে ১৫ বছর পর এর নাম পরিবর্তন করে ২০১৪ সালে দেওয়া হয় ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন বা ডিএলএস পদ্ধতি।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গণিতের অধ্যাপক স্টিভেন স্টার্ন আধুনিক ক্রিকেটের স্কোরিং-রেট বিবেচনায় মূল পদ্ধতির হিসাব হালনাগাদ করেন। তাই ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে প্রথমবারের মতো চালু হয় ডার্কওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতি।
১৯৯৭ সালের আগে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে চালু ছিল অদ্ভুত নিয়ম। যে নিয়মে মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত সব হিসাব পাওয়া যেত। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হয়ে আছে ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচটি। বৃষ্টি নামার আগে প্রোটিয়াদের প্রয়োজন ছিল ১৩ বলে ২২ রান। বৃষ্টি থামার পরে হিসাব এলো ১ বলে ২১ রানের! যার ফলে কপাল পুড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার।
ডাকওয়ার্থ-লুইসের উদ্ভাবক ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থের কাছে ওই ম্যাচটি তাদের নতুন পদ্ধতি বের করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে (ধারাভাষ্যকার) ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনেকিন্সকে রেডিওতে বলছিলেন, নিশ্চয় কেউ কোথাও বসে এর চেয়ে ভালো কিছু বের করবে। এরপরই আমার কাছে মনে হলো যে, এই গাণিতিক সমস্যার সমাধান হওয়া প্রয়োজন। ’
এই পদ্ধতির প্রথম কার্যকর করা হয় ১৯৯৭ সালে। জিম্বাবুয়েকে ২০০ রানে অলআউট করেছিল ইংল্যান্ড। পরে এই পদ্ধতিতে ইংলিশদের সামনে নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ৪২ ওভারে ১৮৬ রান। ম্যাচটি ইংলিশরা হারে ৭ রানে।
২০১০ সালে ক্রিকেট ও গণিতে অবদান রাখার জন্য ডাকওয়ার্থ ও লুইসকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পঞ্চম সম্মান এমবিই পদবি দেওয়া হয়
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২০
এমএমএস