দিনের প্রথম দুই সেশন টাইগার বোলারদের জন্য ছিল নিষ্ফলা। অবশেষে তৃতীয় সেশনে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন হলো স্বাগতিকদের।
সবমিলিয়ে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ৫০৬ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা; লিড ১৪১ রানের। ১৪৪ রানে অপরাজিত থেকে যান সেঞ্চুরিয়ান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
৫ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করে শ্রীলঙ্কা। দিনের শুরুতে একদমই নির্বিষ বোলিং করেন বাংলাদেশের বোলাররা। আড়াই ঘণ্টার প্রথম সেশনে একমাত্র সুযোগ তৈরি করেছিলেন মুমিনুল হক।
বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা আগেই শুরু হয় চতুর্থ দিনের খেলা। দিনের শুরুটা করেন এবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। এরপর একে একে সাকিব আল হাসান, খালেদ আহমেদ, মোসাদ্দেক হোসেন ও মুমিনুল হক আসেন বোলিংয়ে। কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেননি কেউই। একমাত্র মুমিনুলই একবার উইকেট নেওয়ার কাছাকাছি গিয়েছিলেন। তার অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া বল চান্ডিমাল ডিফেন্ড করতে গেলে স্টাম্পের পেছনে দাঁড়ানো লিটন দাসের হাতে যায়, আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান লঙ্কান ব্যাটার। এর বাইরে পুরো সেশনজুড়েই ঠিকঠাক লাইন-লেন্থ খুঁজে পাননি বোলাররা। আগের দিন বিকেলে উইকেটে টার্ন দেখা গেলেও চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে দেখা যায়নি তেমন কিছুই।
লাঞ্চের পর সেঞ্চুরির আগেই ম্যাথিউসকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মোসাদ্দেকের বলে তাকে এলবিডব্লিউ আউট দেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ম্যাথিউস। এরপরই সেঞ্চুরি করেন তিনি। একটু পরই সেঞ্চুরি পেয়ে যান তার সঙ্গী চান্ডিমালও। চা বিরতির আগে অবধি ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৫৯ রান করে শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ১২৩ ও দিনেশ চান্ডিমাল অপরাজিত ছিলেন ১২০ রানে। তাদের জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে ছুটতে থাকে শ্রীলঙ্কা। টানা দুই সেশন বাংলাদেশের বোলারদের হতাশ করেছেন দীনেশ চান্ডিমাল ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। এই দুই সেশনে কোনো উইকেট ফেলতে পারেননি টাইগার বোলাররা।
অবশেষে তৃতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারে 'সেঞ্চুরিয়ান' চান্ডিমালকে ফেরান এবাদত হোসেন। এই ডানহাতি পেসারের স্লোয়ারে সজোরে ব্যাট হাঁকান চান্ডিমাল। কিন্তু কভারে দাঁড়ানো তামিম ইকবাল দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন। বিদায়ের আগে ২১৯ বলের মোকাবিলায় ১২৪ রান করেন চান্ডিমাল। ১১টি চার ও ১ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংস। ম্যাথিউস ও তার জুটিতে আসে ১৯৯ রান।
এরপর সদ্য ক্রিজে আসা নিরোশান ডিকভেলাকে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। ডিকভেলাকে ডাউন দ্য উইকেটে আসতে দেখে বল অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ফেলেন সাকিব। লঙ্কান ব্যাটার সেটা মিস করলে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন উইকেটকিপার লিটন দাস। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাম্পিংয়ের আবেদন করে বাংলাদেশ। আম্পায়ার থার্ড আম্পায়ারের ইশারা করলে শুরুতেই আল্ট্রা-এজ রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাটের কানায় লেগেছে। ফলে স্ট্যাম্পিংয়ের আবেদনে ক্যাচ আউট উপহার পান সাকিব। ডিকভেলা বিদায় নেন ৯ রানে। দলীয় ৫০০ ছাড়ানোর পরেই আরও ১ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। এবার রমেশ মেন্ডিসকে (১০) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এবাদত।
মেন্ডিসের বিদায়ের পর লঙ্কানদের নবম উইকেটের পতন ঘটিয়ে ইনিংসে নিজের পঞ্চম উইকেটের দেখা পান সাকিব। লোয়ার অর্ডার ব্যাটার প্রভিন জয়াব্রিক্রামাকে লিটন দাসের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। সেই সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৯তম বারের মতো ম্যাচে পাঁচ উইকেট পান এই বাঁহাতি স্পিনার। এরপর লঙ্কানদের শেষ ব্যাটার আসিথ ফার্নান্দোকে মুশফিকুর রহমানের থ্রো কাজে লাগিয়ে রান আউট করে ফেরান সাকিব। ফলে গুঁটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস।
বল হাতে সাকিবের ৫ উইকেটের পাশাপাশি ৪ উইকেট নিয়েছেন এবাদত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২২
এমএইচএম