জুয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। বিষয়টি নিয়ে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে সমালোচনার ঝড় উঠার পর টনক নড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)।
যে সাকিব কিনা জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করে এক বছর ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, সেই তিনিই আবার জুয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন কীভাবে, এই প্রশ্নে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। তাকে মোটা দাগে 'লোভী' হিসেবেও আখ্যায়িত করছেন অনেকে। তার এমন 'অর্থলোভ' নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আলোচিত আইনজীবী ও সমাজকর্মী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।
নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে আজ শুক্রবার সাকিবকে নিয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, 'সাকিবকে আমি তিন লাখ টাকা দিতে চাই। আমার কাছে তিন লাখ টাকা আছে পারিবারিক খরচের জন্য। সাকিবকে তিনটা লাখ টাকা দিলে তার ভেতর থেকে যে টাকা ইনকাম করার যে... কিভাবে টাকা ইনকাম করবে, এইটা যদি কিছুটা কমে। তিনি কিছুদিন আগে জুয়ার তথ্য গোপন করার জন্য এক বছর ক্রিকেট থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন। উনি ক্রিকেট খেলতে পারেন নাই। এবার তিনি আরও একটা জুয়ার (সংশ্লিষ্ট) প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছা দূত হওয়ার কারণে আমাদের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বলেছে যে আপনি হয় ক্রিকেট খেলবেন না হলে জুয়ার দিকে যাবেন। উনি বাধ্য হয়ে গতকাল (চুক্তি) ক্যানসেল করছেন। '
সাকিবের এসব কর্মকাণ্ড দেখে দেশের তরুণরা বিপথগামী হবে বলেও মনে করেন সুমন, 'সব দায়িত্ব কি রাজনীতিবিদদের? সব দায় কি প্রধানমন্ত্রীর? সাকিবের দেড় কোটি ফলোয়ার ফেসবুকে দেখলাম। সব তরুণ ফলোয়ার। এই যে লোকটার যত কর্মকাণ্ড, পরিষ্কারভাবে লোকজন বলে যে সাকিব নিজের জন্য খেলে, দেশের জন্য খেলে না। সাকিব টাকার বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করে না। এই যে একজন ক্রিকেট সেলিব্রিটি, সে কী সিগন্যাল দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষকে?'
'সে তরুণদেরকে সিগন্যাল দিচ্ছে যে যেভাবে পারো বাংলাদেশ থেকে টাকা-পয়সা ইনকাম করে তুমি বিদেশ চলে যাও। যেভাবে পারো তুমি বাংলাদেশের মাটি-বাতাস ব্যবহার করে সেলিব্রিটি হও; এরপর বাংলাদেশের চিন্তা বাদ দাও। সাকিব তরুণদের বলতেছে, জুয়া হোক যেভাবে হোক যদি চান্স পাও বেচে ফেলো দেশ! জুয়ার মাধ্যমে দরকার হলে দেশ বেচে ফেলো, তবু তুমি তোমার বউ-বাচ্চা নিয়ে আরামে থাকো। '
তিনি বলেন, 'সাকিব আল হাসান একটা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষ। আমি তার ক্রিকেট মেধার প্রশংসা করি। কিন্তু দেশের চেয়ে যদি ব্যক্তি বড় হয়ে যায়... আল্লাহ কি তাকে শুধু ক্রিকেট জ্ঞান দিছে, বিবেক বলে কিছু দেয় নাই? সাকিব যদি ঠিক না হয়, তাহলে দেশের ক্রিকেটার-ফুটবলাররা কী শিখবে? আমার আর তার প্রতি কিছু বলার নাই, আমি শুধু মনে মনে ঘৃণা প্রকাশ করতেছি তার জন্য। যদি তার এলাকার কেউ থেকে থাকেন, সাকিবে সঙ্গে আমার যোগাযোগ করার যোগ্যতাও নাই, সে ফোন ধরে কি না জানি না , আমি তিন লাখ টাকা জমা রাখছি তার জন্য, তার পরিবারের খরচের জন্য; যদি খরচের কারণে তার এত টাকা লাগে... তার তো টাকার অভাব নাই। আল্লাহ তারে অনেক টাকা দিছে। '
সাকিব রাজি থাকলে তিন লাখ টাকা দিতে চান ব্যারিস্টার সুমন। তিনি বলেন, 'আমার কথা হচ্ছে যে এত বড় সেলিব্রিটি হয়ে দেশের নাম ব্যবহার করে এখন দেশটার বারোটা বাজাইতে চাও সাকিব আল হাসান? তাহলে দেশটা বাঁচাবে কে? তুমি তো আমেরিকা চলে যাবা। কিন্তু এখানে যারা থাকবে, তাদের কী হবে? এটা তোমার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলাম। আর কেউ যদি একটু যোগাযোগ করতে পারেন, তা হলে আমাকে বইলেন, সাকিবের অ্যাকাউন্ট নাম্বারটা যদি দেন, উনি যদি রাজি থাকেন তাহলে এই তিনটা লাখ টাকা আমি সাকিবের অ্যাকাউন্টে দিতে চাই। '
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২২
এমএইচএম