চট্টগ্রাম: বছর ঘুরে এসেছে বসন্ত। প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রঙের ছোঁয়া।
ফাগুন যেন বাঙালির এক উৎসবের নাম। আর এ উৎসব রাঙাতে কতই না আয়োজন। যার মূল অনুষঙ্গ রঙ-বেরঙের ফুল। সব আবেদন, অনুরাগ, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের বড় মাধ্যম এ ফুল। তাই এ সময় ফুলের চাহিদাও থাকে বেশি।
পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস ঘিরে চেরাগী পাহাড়ে ফুলের দোকানগুলোতে বেড়েছে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা। গ্লাডিওলাস, ডালিয়া, গাঁদা, জারবেরা, জিপসি, বেলি, জবা, রজনীগন্ধাসহ নানা প্রজাতির ফুলে ছেয়ে গেছে ফুলের দোকানগুলো।
গত কয়েক বছর করোনা ও বিভিন্ন সংকটে ফুলের ব্যবসা তেমন ভালো না হলেও এবছর আশানুরূপ ফুল বিক্রির আশা করছেন বিক্রেতারা। মঙলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) উদযাপিত হতে যাওয়া বসন্ত উৎসব ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ফুল কেনার আগাম বায়না করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, ফুলের যোগান থাকলেও দাম বেশি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। ফুল কিনতে আসা এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ফুল কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দাম শুনে মনে হচ্ছে কেনা হবে না। ১৫ টাকার গোলাপ এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। তাছাড়া চায়না রোজ কিনতে গেলে তো আরও বেশি দাম। প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। বলতে গেলে ৬০ টাকার নিচে কোনো ফুলই নেই বাজারে।
এসব ফুলের মধ্যে দেশি লাল গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। অন্যান্য ফুলের মধ্যে বিভিন্ন রঙের চাইনিজ গোলাপ প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি স্টিক ৩০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ৪০ টাকা ও গাঁদা ফুল লহরপ্রতি ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে মেয়েদের খোঁপার গাজরা আর মাথার ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১২০-১৫০ টাকা করে।
চট্টগ্রাম ফুল ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জসিম বাংলানিউজকে জানান, চেরাগি-মোমিন রোডে ৬২টি ফুলের দোকান আছে। যেখানে পাইকারি খুচরা ফুল বিক্রি হয়। গত কয়েক বছর ফুল ব্যবসা মন্দা ছিল। এ বছর আশা করছি ব্যবসা ভালো হবে। যেহেতু এখানে ফুলের পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হয়। আশা করি সব মিলিয়ে আমরা ফুলের ভালো দাম পাবো।
তিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরগুলোতে পহেলা বৈশাখসহ বছরে ৫-৭ দিন ফুলের চাহিদা বেশি থাকতো। এরপর বিয়েশাদি, সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুল বিক্রি হতো সারা বছর। করোনা সব শেষ করে দিয়েছে। চাষিরা পুঁজি হারিয়েছে, ফুলের কারিগররা হয়েছে বেকার। অনেক দোকান মালিক ব্যবসা ছেড়েছে। অনেকদিন পর এখন আবার পরিস্থিতির একটু উন্নতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এমআর/টিসি