ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বেসরকারি পর্যায়েও আমদানি করা যাবে এলএনজি 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
বেসরকারি পর্যায়েও আমদানি করা যাবে এলএনজি  কেজিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম

চট্টগ্রাম: বসুন্ধরাকে দেশের সবচেয়ে বড় শিল্পগ্রুপ উল্লেখ করে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, শিল্প কারখানায় মূল চালিকা শক্তি হলো প্রাকৃতিক গ্যাস। সেই প্রাকৃতিক গ্যাসটাই আমরা এখানে সরবরাহ করবো।

এর ফলে এখানে শিল্পায়ন হবে, প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে তেমনি এতদিন বিদেশ থেকে যেসব পণ্য আমদানি করতে হতো সেসব পণ্য স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হলে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

বেসরকারি পর্যায়েও এলএনজি আমদানি করা যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে এলএনজি আমদানির নীতিমালা তৈরি করা আছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গেলে দেখতে পাবেন। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপ ও ওমেরা থেকে আবেদন পেয়েছিলাম যে তারা এলএনজি আমদানি করতে চায়। তার প্রেক্ষিতে একটি কমিটি করা হয়েছিল। এই নীতিমালা আমার হাতে ড্রাফট করা। সেই নীতিমালা এখনও আছে। চাইলে আপনারা এলএনজি আমদানি করতে পারেন।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোন লিমিটেডের (বিআইইজেডএল) নিজস্ব অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার ডিআরএস ও সঞ্চালন লাইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
    
কেজিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, প্রথম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা এখানে ১১ কিলোমিটার সঞ্চালন পাইপলাইন এবং ৬ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করেছি। দৈনিক ২০০ কিলোমিটার ক্ষমতাসম্পন্ন সিজিএস স্থাপন করেছি। এছাড়া ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার দুটো ডিআরএস স্থাপন করেছি। প্রথম পর্যায়ে যারা সংযোগ গ্রহণ করবেন তাদের চাহিদা পূরণ করবো। এরপরে ধাপে ধাপে চাহিদা বাড়লে আমরাও সেভাবে কাজ করবো যাতে সবার চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, আমরা কিছু দেশীয় গ্যাস উৎপাদন করে থাকি। আর কিছু আমরা আমদানী করে থাকি এলএনজি আকারে। গভীর সমুদ্রে আমাদের দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। সে টার্মিনালের মাধ্যমে আমরা এলএনজি সরবরাহ করছি। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনে শতভাগ এলএনজি ব্যবহৃত হয়। পরিকল্পনা আছে মাতারবাড়িতে আমরা একটি ল্যান্ডবেজড এলএনজি টার্মিনাল করবো। সেখানে ১ম পর্যায়ে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার হবে পরবর্তিতে সেটা সম্প্রসারণের সুবিধা থাকবে।

বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হেড অব প্রজেক্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস ও ভাইস চেয়ারম্যানের সচিব ফয়েজুর রহমান।

ফয়েজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে অসংখ্য শিল্প কারখানা গড়ে উঠছে। এ কারখানাগুলোর জন্য নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবারহ খুবই জরুরী। তাই প্রত্যেক শিল্প প্রতিষ্ঠান নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ পাবে এটাই প্রত্যাশা করি। এখানে আমাদের কেমিক্যাল কারখানা হতে যাচ্ছে। কেমিক্যাল কারখানার অন্যতম কাঁচামাল হচ্ছে গ্যাস ও পানি। সঠিকভাবে গ্যাস সরবরাহ না হলে কেমিক্যাল কারখানাকে বড় লোকসান গুনতে হবে।

তিনি আরো বলেন, চলমান গ্যাস সংকটে কাজ করতে চায় বসুন্ধরা গ্রুপ। বেসরকারি পর্যায়ে এলএনজি’র মাধ্যমে গ্যাস সরবারহের বিষয়টা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়। সে ক্ষেত্রে সংকট দেখা দিলে আমরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে কেজিডিসিএল’কেও গ্যাস সরবারহ করতে পারব।

বসুন্ধরা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রকল্প প্রধান মো. জুলফিকার রহমান বলেন, ডিআরএস উদ্বোধন হওয়া মানে কেমিক্যাল প্রকল্পের একটি অংশ উদ্বোধন হওয়ার। কারণ আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি এই কারখানার মূল কাঁচামাল যে প্রাকৃতিক গ্যাস সেটার কোন অভাব হবে না। তবে বসুন্ধরা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের কমিশনিং শুরু হবে আগামী মে মাসে । তখন ধাপে ধাপে এই গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাবে। এই জোনে আমাদের আরও কেমিক্যাল প্রজেক্ট আছে।

তিনি বলেন, এখানে যে পণ্য তৈরি হবে তা খুবই সফিসটিকেটেড। আমাদের গার্মেন্টস সেক্টরে বিলিয়ন ডলারের কেমিক্যাল লাগে। এরমধ্যে এসিটিক এসিড, ফরমিক এসিড, ফরমালডিহাইড, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এবং মেলামাইন ও মেলামাইন মোল্ডিং সবধরনের কেমিক্যাল এখানে হবে। এছাড়া পেট্রোলিয়ামে ব্যবহৃত মিথানল এখানে তৈরি হবে। এটা বেসরকারি খাতে এশিয়ার মধ্যে অন্যতম বড় কেমিক্যাল প্রকল্প।

কেজিডিসিএল এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর (জোন-১৫) বিআইইজেডএরের নিজস্ব প্রকল্প অঞ্চলে বহুল প্রতীক্ষিত এ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যাস সরবরাহ স্টেশন ও সঞ্চালন পাইপলাইন স্থাপন করা হয়। যা বসুন্ধরা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (বিসিআইএল), বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (বিএমএসআইএল) মত চলমান ও আগামীর প্রকল্পগুলোর সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেজিডিসিএল প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাহিদ আলম, কেজিডিসিএল মহাব্যবস্থাপক (আইটি ও প্রিপেইড মিটারিং) প্রকৌশলী রইস উদ্দিন আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (বিপণন-দক্ষিণ) প্রকৌশলী আমিনুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুণ্ড, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন, ভারপ্রাপ্ত) মোজাহার আলী, বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রকল্প প্রধান মো. মাজেদুল ইসলাম, এইচওডি এইচআর এ- এডমিন ইমরান বিন ফেরদৌস, এইচওডি মার্কেটিং এ- বিডি সেক্টর-সি মো তৌফিক হাসানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।