চট্টগ্রাম: ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ স্লোগানে রেলে অবৈধ ভ্রমণে জরিমানা আদায় ও কালোবাজারি রোধে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। রেলের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম সনদ যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এরই অংশ হিসেবে প্রতিদিনই প্রতিটি ট্রেনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। বুধবার (১ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে এ কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করবেন পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক।
পুরো কার্যক্রম তদারকি করার জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে ৬ টি টাস্কফোর্স গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। তারা সরেজমিনে বিষয়টি তদারকি করবেন।
চেকিং জোরদার:
ট্রেন থেকে নেমে বাহির হওয়ার সময় প্রত্যক যাত্রীকে টিকিট প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় জরিমানা দিতে হবে। ট্রেনের প্রতিটি বগিতে চেকিং ব্যবস্থা জোরদার করছে রেলওয়ে। যদি কোনও যাত্রীকে টিকিট ছাড়া পাওয়া যায় তাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।
সচেতনতামূলক কার্যক্রম:
রেলের টিকিট কেনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের এনআইডি বা জন্ম সনদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক কার্যক্রমে সচেতনতা তৈরি করতে নিয়মিত মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ব্যানার, ফেস্টুন, টিকিট কন্ট্রোল রুম থেকে প্রচারণা, টিকিট বিক্রির সময় প্রচার, রেলওয়ে স্টেশনে নিয়মিত প্রচারণা চালাচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।
অফলাইন/এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন পদ্ধতি:
কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয়কারী যাত্রীরা অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে যে কোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন।
মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করে BR<space>NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ (জন্ম তারিখের ফরম্যাট- জন্ম সাল/মাস/দিন) এসএমএস পাঠাতে হবে ২৬৯৬৯ নম্বরে। ফিরতি এসএমএস-এর মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কিনা, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি দেখিয়ে একজন যাত্রী কাউন্টার থেকে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কাটতে পারবেন। ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি রোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বুধবার থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট ক্রয়ের কার্যক্রম শুরু হবে। ৫ তারিখের অগ্রীম টিকিট বিক্রি দিয়ে শুরু হবে। আমরা যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছি এটিতে যাত্রীদের সাময়িক কষ্ট হলেও পরে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এতে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য থাকবে না।
জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের মাধ্যমে আন্তনগর ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে। রেলের কর্মকর্তারা পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিনের মাধ্যমে টিকিট যাচাই করবেন। কেউ অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কেটে ভ্রমণ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টিকিট কালোবাজারি বন্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সরকারি উদ্যোগের অংশ এটি।
রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ব্যবস্থায় যাত্রীদের হয়রানি ও কষ্ট বাড়বে। কারণ, এই ব্যবস্থায় টিকিট কাটতে হলে ১২ বছরের বেশি বয়সী দেশের জনসংখ্যার সবাইকে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের পর ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কাটতে হলে অন্তত একটি ই-মেইল আইডি লাগবে। কারণ, ই-মেইল আইডি দিয়ে সাইন আপ ছাড়া নিবন্ধন কিংবা টিকিট কাটা যাবে না। আর যারা কাউন্টার থেকে টিকিট কাটবেন, তাদেরও আগে থেকে নিবন্ধন থাকতে হবে। এই বিবেচনায় দেশের একটা বড় জনগোষ্ঠী টিকিট কাটার সুযোগই পাবে না।
যাত্রীরা এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন বা পাসপোর্টের মাধ্যমে নতুন ব্যবস্থায় নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন। দেশের বিভাগীয় শহরের রেলস্টেশন ও আন্তনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনগুলোতে সর্বসাধারণের নিবন্ধনপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
বিই/টিসি