ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কর্ণফুলী দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৩
কর্ণফুলী দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবি ...

চট্টগ্রাম: কর্ণফুলী রক্ষায় তিন দিনব্যাপী সাম্পান খেলা ও চাটগাঁইয়া সাংস্কৃতিক মেলার প্রথম দিন ‘বিনি সূতার মালা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে নদী দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবি এসেছে।  

বুধবার (১ মার্চ) নদীতে ভাসমান মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি এক ঘাট থেকে অন্যঘাটে ঘুরে ঘুরে কর্ণফুলী দখল দূষণমুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নদী ব্যবহারকারীদের মধ্যে উপস্থাপন করা হয়।

এ সময় আঞ্চলিক গান ও পাহাড়ি নৃত্যের আয়োজন করা হয়। ভাসমান মঞ্চ কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট, চরপাথরঘাটা সাম্পান ঘাট, গাইজ্জার ঘাট, তোতার বাপের হাট, কালুরঘাট বোয়ালখালী হয়ে নগরের ব্রিজ ঘাট অভয়মিত্র ঘাট ও বাংলাবাজার এসে শেষ হয়।
 

বিনি সূতার মালার উদ্বোধন করেন সাম্পান খেলা ও চাঁটগাইয়া সাংস্কৃতিক মেলার প্রধান সমন্বয়ক শাহেদুর রহমান শাহেদ। উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী ফরিদের সভাপতিত্বে ও উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক এসএম পেয়ার আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডায়মন্ড সিমেন্টের পরিচালক হায়দার আলী। প্রধান বক্তা ছিলেন কর্ণফুলী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চরপাথরঘাটার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক মেম্বার।  

কর্ণফুলী নদী দখল দূষণমুক্ত করার গুরুত্ব সম্পর্কে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান।  

হায়দার আলী বলেন, কর্ণফুলী রক্ষায় সংস্কৃতির সুদৃঢ় বন্ধন বিনি সূতার মালা। এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে ঘুরে ঘুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার এই নান্দনিক আয়োজন সাম্পান মাঝিদের সার্বিক সহযোগিতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে। সাম্পান ঘাট ঘাটে সাম্পান মাঝি না থাকলে আমাদের সাম্পান চট্টগ্রামের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। যা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।

তিনি ব্যবসায়ী ও নদী ব্যবহারকারী চট্টগ্রাম বন্দরকে নদীর সীমানায় না আসার আহবান জানিয়ে বলেন, জীবন্ত ও সুস্থ রাখতে হলে কর্ণফুলীকে নিজস্ব ধারায় প্রবহমান রাখতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

ড.ইদ্রিস আলী বলেন, সম্প্রতি সাম্পান মাঝি পেশাদার পাটনিজীবীদের বিভক্ত করে ফায়দা লোটার চেষ্টা ও কর্ণফুলী থেকে সাম্পান বিলুপ্ত করার পাঁয়তারা করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। যা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।
সামাজিক আন্দোলন না থাকলে এতদিনে কর্ণফুলীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেত। সাম্পান মাঝি ও সামাজিক সংগঠনের আন্দোলন সত্ত্বেও কর্ণফুলীর দেহ খুঁড়ে খুঁড়ে খাওয়া হচ্ছে। এটা আমাদের বন্ধ করতেই হবে।  

আলীউর রহমান বলেন, কর্ণফুলী চট্টগ্রাম ও দেশের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস সংস্কৃতি ধারণ করছে। যে সংস্কৃতি সাম্পানের, গানের, ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির।  

তিনি দেশের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির স্বার্থে কর্ণফুলী রক্ষার আহবান জানান।

সনজিত আচার্যের পরিচালনায় বিনি সূতার মালায় আঞ্চলিক গান পরিবেশন করেন শিল্পী গীতা আচার্য্য ও শীলা চৌধুরী। পলিয়ন মোবাংয়ের পরিচালনায় মারমা ত্রিপুরা নৃত্য পরিবেশন করেন শ্রীদেবী ত্রিপুরা, মেমাসিং মারমা।  

উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি জাফর আহমদ, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান দয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ লেদু মিঞা, জেবল হোসেন, আলী নূর, সহ কোষাধ্যক্ষ ফরিদ আহমদ প্রমুখ।  

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সকাল ১১টায় ফিরিঙ্গিবাজার ব্রিজ ঘাট থেকে শুরু হবে সাম্পান শোভাযাত্রা। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। সাম্পান শোভাযাত্রায় পাঁচটি সাম্পান মাঝি সমিতির ৩ শতাধিক সাম্পান অংশ নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২৩ 
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।