চট্টগ্রাম: প্রতি বছর রমজান মাস এলেই বন্দরনগরীর বাসিন্দারা অসহনীয় যানজটের মখোমুখি হন। আর এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে।
তারা বলছেন, রমজানে যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সেই জন্য আগেভাগেই সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।
সিএমপি ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন রমজানে টেরিবাজার, রিয়াজউদ্দীন বাজার, তামাকুমণ্ডি লেইন ও মার্কেটকেন্দ্রিক সুষ্ঠু যানবাহন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। এর পরও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সিডিএ, চসিক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়নমূলক কাজ। এর মধ্যে রমজানে সরকারি-বেসরকারি অফিস ইফতারের আগেই ছুটি হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বর্তমানে সিএমপি’র ট্রাফিক উত্তর, দক্ষিণ, বন্দর ও পশ্চিম বিভাগের অধীনে ৪০ জন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর এবং ২০০ জন সার্জেন্ট দায়িত্ব পালন করেন। যেখানে যানজটের মাত্রা বেশি সেখানে কম যানজটপূর্ণ এলাকার জনবলকে অতিরিক্ত হিসেবে পাঠানো হবে।
সিএমপির ট্রাফিক বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বন্দর বিভাগে মার্কেট ও বিপণী বিতানের সংখ্যা অন্য বিভাগের তুলনায় কম। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি অফিস রয়েছে। রমজান মাসে অফিস শেষে প্রত্যাশা থাকে নিরাপদে বাসায় বা ঘরে ফিরে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ইফতার করা। আবার অনেকের চেষ্টা থাকে ইফতারের পর বাসায় ফিরে স্থানীয় মসজিদে ইবাদত করার। একসঙ্গে ইপিজেডে গার্মেন্টস ছুটি হলে যানজট সৃষ্টি হয়। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে রাস্তায় যাতে যানজট সৃষ্টি না হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ করা। আমাদের ফোর্স মোতায়েন থাকবে।
সিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. রইছ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, যানজট নিরসনে ট্রাফিকের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে টেরিবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যানজট নিরসনে পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দদের ভূমিকা রাখতে হবে।
সিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) স্পিনা রানী প্রামাণিক বাংলানিউজকে বলেন, রমজান মাসে অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে এবারও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রমজানে রাস্তায় মানুষ যেন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে সেজন্য সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করা সভা করেছি। সভায় সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা হয়েছে।
ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের টিআই (অ্যাডমিন) অনিল বিকাশ চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, রমজানে যানজট নিরসনে তিন ভাগে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। যেখানে মানুষের সমাগম বেশি থাকবে, সেখানে জনবল বাড়ানো হবে। ট্রাফিক পুলিশকে সহযোগিতার জন্য মার্কেটের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। অতিরিক্ত ৬০ জন পুলিশ সদস্য চাওয়া হয়েছে । বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে ২৯২ জন। রাস্তা ও ফুটপাতের ওপর ইফতারের দোকান বসতে না দেওয়া, বিভিন্ন শপিংমলের সামনে অবৈধ পার্কিং রোধ, যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা ও মলম পার্টির উপদ্রব রোধে কাজ করবে ট্রাফিক পুলিশ।
ট্রাফিক উত্তর বিভাগের টিআই (অ্যাডমিন) মো.কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় সিস্টেম ম্যানেজমেন্টে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাতে সহজে লোকজন চলাচল করতে পারে। রমজানে নতুন করে কোনও হকারকে রাস্তায় বসতে দেওয়া হবে না। বাহির থেকে নগরে প্রবেশ করা রিক্সাগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এজন্য চসিকের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ওয়াসার সঙ্গে কথা হয়েছে, যেন নতুন করে রাস্তা খোঁড়াখুড়ি না করে।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৩
এমআই/টিসি