চট্টগ্রাম: ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, বর্তমানে অনেক কার্যকরী অ্যান্টিবায়োটিককে সংক্রমণ চিকিৎসায় অকার্যকররূপে পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমাদের সবার আগে জানা দরকার এই অণুজীববিরোধী প্রতিরোধিতা বা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এবং সম্ভাব্য কারণ ও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে।
রোববার (৪ জুন) নগরের একটি হোটেলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উদ্যোগে ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বিষয়ক সচেতনতা সভার সমাপনী দিনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যদি অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধ করা না যায় এবং নতুন প্রজন্মের কোনো অ্যান্টিবায়োটিক বাজারে না আসে তবে বিশ্ব একটা ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হবে। বাংলাদেশ সরকার অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ব্যাপারটি খুবই গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। সুনির্দিষ্টভাবে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তাছাড়া ফার্মেসিগুলোতে ফার্মাসিস্টদেরও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ক্রেতাদের বিষয়টি অবহিত করতে হবে।
ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রি নিষিদ্ধ উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল কোনোভাবে বিক্রি করা যাবে না। এ ওষুধের গায়ে তা লিখাও রয়েছে। অসাধুচক্র একসময় ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বাজারে ছেড়ে দিত। এতে সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স পেত না। এ ব্যাপারে সরকার কঠোর হয়েছে। কোনো ফার্মেসি বিক্রয়যোগ্য নয় এমন ওষুধ রাখলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ব্যবস্থা নিতে পারবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারানোর অর্থ হচ্ছে- অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে জীবাণুগুলোর মধ্যে পরিবর্তন হয়, বেঁচে থাকার সামর্থ্য অর্জন করে। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ভাইরাসজনিত সর্দি, কাশি, জ্বরের মতো সাধারণ রোগের জন্যও চিকিৎসকরা অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কনসালটেন্ট (এএমআর) কর্ণেল এ কে এম শহীদুল হাসান (অব.), ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান, ক্যামিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি সমীর কান্তি শিকদার প্রমুখ।
দুই দিনব্যাপি এ আয়োজন শুরু হয় শনিবার (৩ জুন)। এতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ে চট্টগ্রামের ফার্মাসিস্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। ফার্মাসিস্টরা বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৩
এমআর/টিসি