চট্টগ্রাম: আমদানির খবরে পেঁয়াজের পাইকারি বাজারে ধস নেমেছে। আড়তে রোববারের চেয়ে কেজিতে ২৫-৩০ টাকা কমেছে।
সোমবার (৫ জুন) বিকেল তিনটায় এন আলম এন্টারপ্রাইজের কর্মকর্তা জানান, গতকাল ৯০ টাকা বিক্রি করেছি।
পাবনা, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর থেকে বেপারিরা পেঁয়াজ এনে খাতুনগঞ্জে আড়তে দেন। আমদানির খবরে সেখানে দাম কমেছে মণে ৭০০-৮০০ টাকা। তার প্রভাব পড়ছে পেঁয়াজের বাজারে।
মেসার্স আলীম ট্রেডার্সের মাহফুজুল আলম জানান, গতকাল ৮৭-৯০ টাকা বিক্রি করছি। এখন ৭০ টাকাও বিক্রি করতে পারছি না। ভারতের পেঁয়াজ ঢুকলে দাম আরও কমবে আশঙ্কায় পেঁয়াজ কিনছে না। আজ খাতুনগঞ্জে ২০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কিনা সন্দেহ।
বিসমিল্লাহ বাণিজ্যালয়ের অভি জানান, গতকাল ৮৭-৮৮ টাকা বিক্রি করেছি। আজ ৭০ টাকায়ও বিক্রি করতে পারছি না। আমরা কেজিপ্রতি ৭০ পয়সা পাই। দাম বাড়লে বা কমলে আমাদের কমিশনে হেরফের হয় না।
চীনা রসুন ১২৫, ইন্ডিয়ান রসুন ৮৫, দেশি রসুন ১১৫ টাকা, কেরালা আদা ১৮০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি। এছাড়া কোনো কোনো আড়তে মানভেদে পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকাও বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, আমদানির অনুমতিপত্র দেওয়ার খবরেই কেজি প্রতি ৩০ টাকা কমে যাওয়াতে প্রমাণিত হলো পেঁয়াজের বাজারে সিন্ডিকেট সক্রিয় ছিল। তারা দেশি কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে মাত্রাতিরিক্ত বেশি দামে বিক্রি করছিল। সরকারকে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন, চাহিদা, ঘাটতি, আমদানি ইত্যাদির সঠিক তথ্য রাখতে হবে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিংসহ টিসিবিকে শক্তিশালী করতে হবে।
খাতুনগঞ্জে পেয়াজের বড় বিপণিকেন্দ্র হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বাংলানিউজকে বলেন, বলতে গেলে পেঁয়াজের আড়ত আজ ক্রেতাশূন্য ছিল। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর পর দেশি পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এমন আশঙ্কায় পাইকাররা পেঁয়াজ কিনছেন না। এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে প্রায় ৩০ টাকা। রোববার যে পেঁয়াজ আড়তে ৮৫-৯০ টাকা বিক্রি হয়েছে তা সোমবার ৬০-৬৫ টাকায় ঠেকেছে। তারপরও ক্রেতা ছিল না তেমন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমদানির খবরে পেঁয়াজের দরপতনের পর বেপারিদের লোকসান হয়েছে। যারা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে খাতুনগঞ্জের আড়তে পাঠিয়েছিলেন। অবশ্য আড়তদাররা যেহেতু কমিশনের ভিত্তিতে ব্যবসা করেন তাদের লোকসান নেই। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বেপারির নির্ধারিত দামে বিক্রি করে আড়তদার কমিশন পায় মাত্র ৭০ পয়সা।
চট্টগ্রামে পেঁয়াজের আমদানিকারক নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হয় স্থলবন্দর দিয়ে। তাই স্থলবন্দর কেন্দ্রিক আমদানিকারকরাই পেঁয়াজ আমদানি করে সারা দেশে সরবরাহ দেন। যখন বেশি সংকট দেখা দেয় তখন চট্টগ্রামের আমদানিকারকরা চীন, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকে।
তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজ বেশি দিন টিকলেও আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ দ্রুত পচনশীল। তার ওপর তীব্র গরম পড়ছে। তা-ও শঙ্কা সৃষ্টি করছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আশাকরছি ভারত থেকে পেঁয়াজ ঢোকার দুই দিনের মধ্যে চট্টগ্রামের বাজারে চলে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩
এআর/টিসি