চট্টগ্রাম: নগরের পাহাড়তলী থানার হালিশহর নয়াবাজার এলাকায় আজাদুর রহমান হত্যার মামলার প্রধান আসামিসহ দুই জনকে গ্রেফতার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগ। তারা হত্যার পর সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।
রোববার (৪ জুন) বিকেলে খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার শোলাদানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন, আবুল হাসনাত রাজু (৩৪) ও ওসমান (৩৫)।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজাদের স্ত্রী নাজমা আক্তার বাদি হয়ে ওসমান, রাজীব, রাজু ও ফয়সাল নামে চারজনের নাম উল্লেখ করে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন।
সিএমপি গোয়েন্দা (বন্দর ও পশ্চিম) বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান, আজাদের সঙ্গে স্থানীয় নয়া বাজার বিশ্বরোড এলাকার চাঁদা আদায়ের বিষয় নিয়ে গ্রেফতার আবুল হাসনাত রাজু ও ওসমানের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। আজাদ ও তার ভাইয়ের সঙ্গে টমি নামে এক যুবকের ঝগড়া হয়েছিল। ভোররাতে টমি, ফাহিম, ওসমান ও রাজু মোটর সাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজাদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ায়। এরপর গত ২৮ মে ভোর সাড়ে চারটার দিকে আজাদ বাসার গলির সামনে নয়াবাজার রোডে আসলে পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকে আবুল হাসনাত রাজু ও ওসমান।
তিনি আরও জানান, টমি আজাদকে প্রথম ছুরিকাঘাত করে পরে ফাহিমসহ অন্যরা তাকে আঘাত করে। পরবর্তীতে মেডিক্যাল নেওয়ার পথে আজাদের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর তারা টমির বাসায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছোরা রেখে আসে এবং পরনের কাপড় পাল্টে সেগুলো ভিজিয়ে রাখে। রাজু ও ওসমান হত্যাকাণ্ডের পর খুলনা পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে সাতক্ষীরা হয়ে তারা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর আগেই রোববার তাদের খুলনার পাইকগাছা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা টমির বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা দুটি উদ্ধার করা হয়েছে । পলাতক টমিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গত ২৮ মে দিবাগত রাত সাড়ে বারটার দিকে একব্যক্তি নগরের নয়াবাজার এলাকার একটি কারখানার গেইটের সামনে প্রশ্রাব করলে কারখানার নৈশপ্রহরী আজাদুর রহমানের বড় ভাই মফিজ তাকে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যাক্তি মফিজকে বলে, ‘এটা সরকারি জায়গা তুই বাধা দেওয়ার কে’ এই বলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামি আবু তাহের রাজীব, ওসমান, আবুল হাসান জায়গায় এসে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। বড় ভাইয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটির শব্দ শুনে আজাদুর রহমান ঘটনাস্থলে গেলে তার সঙ্গেও কথা কাটাকাটি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে আসামিরা দেখে নিবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে আজাদুর রহমান দোকান থেকে নাস্তা আনার জন্য বাসা হতে বের হয়। তিনি নগরের পাহাড়তলী থানার নয়াবাজার পৌছালে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এলোপাতাড়ি পেটে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ছুরিকাঘাতের ফলে আজাদের পেটের ভুরি বের হয়ে যায়। চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি