ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রিচার্জেবল ফ্যান-লাইটের দোকানে ক্রেতার ভিড়, দাম আকাশছোঁয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৩
রিচার্জেবল ফ্যান-লাইটের দোকানে ক্রেতার ভিড়, দাম আকাশছোঁয়া ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রামে: তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা নগরবাসীর। সমানতালে চলছে লোডশেডিংও।

তাই গরম থেকে বাঁচতে বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছেন অনেকে। তাই বাজারে বেড়েছে রিচার্জেবল ফ্যানের চাহিদা।
কেউ কেউ সঙ্গে কিনছেন রিচার্জেবল লাইট। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এসব ফ্যান-লাইটের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।  

নগরের তিন পুলের মাথা, রাইফেল ক্লাব, সিডিএ মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রিচার্জেবল ফ্যানের ব্র্যান্ড ও মান ভেদে দুই থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। বিশেষ করে দেশীয় ব্র্যান্ডের চেয়ে বিদেশি ব্র্যান্ডের ফ্যানের দাম সবচেয়ে বেশি।  দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন কিংবা ভিশনের তৈরি টেবিল ফ্যান বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায়। অন্যদিকে চায়নার তৈরি চার্জার ফ্যান কেনেডি ও ফাইন্ডার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। যা একমাস আগেও ছিল সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।  

অন্যদিকে আইপিএস কিংবা জেনারেটরের দোকানেও রয়েছে ক্রেতা সমাগম। মান ও সক্ষমতার ভিন্নতায় ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকাও বেড়েছে এসব পণ্যের দাম। মাসখানেক আগে তিন হাজার ভিএ আইপিএস ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৩৯ হাজার থেকে ৩৯ হাজার ৯শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লুমিনাস, রহিম আফ্রোজ, এক্সট্রিম ব্র্যান্ডের আইপিএসেরও চাহিদা বেশি বর্তমানে।  

বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও দাম বাড়ার পেছনে পর্যাপ্ত যোগান না থাকাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, সম্প্রতি ডলারের দাম বাড়তি থাকায় আমদানিও কমে গেছে। তাছাড়া করে চাহিদা বেড়েছে। তাই বাজারে প্রভাব পড়েছে। যেহেতু বাজারে এসব চায়না ফ্যানের যোগান কম তাই দাম আরও বাড়তে পারে।  

তারা বলছেন, অধিকাংশ রিচার্জেবল লাইট, ফ্যান ও ব্যাটারি জাতীয় পণ্যগুলো চায়না থেকে আমদানি করা হয়। তবে পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়ার ফ্যানের চাহিদাও কম নয়। সারাবছরের মধ্যে শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালে বেচাবিক্রি বেশি হয়। হঠাৎ লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়ায় এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় দামটাও তুলনামূলক বেড়েছে।

এদিকে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২৭টি প্ল্যান্ট থাকলেও সক্রিয় উৎপাদনে রয়েছে মাত্র ১৬টি প্ল্যান্ট। তাও উৎপাদন করছে সক্ষমতার অর্ধেকেরও কম। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে ২৭টি প্ল্যান্টের মধ্যে ২৫টি প্ল্যান্টের সক্ষমতা রয়েছে ২ হাজার ৬৬৩ দশমিক ১ মেগাওয়াট। বাকি দুইটি প্ল্যান্টের উৎপাদনও নেই, সক্ষমতার কথাও উল্লেখ নেই। চালু থাকা প্ল্যান্টগুলোর সক্ষমতা ১ হাজার ৯৭৯ দশমিক ৭ মেগাওয়াট। আর প্ল্যান্টগুলোর উৎপাদন ১ হাজার ৩০৭ মেগাওয়াট। অথচ চট্টগ্রামের বৈদ্যুতিক চাহিদা গতকালের হিসেবে ১ হাজার ৬৪৯ মেগাওয়াট।  

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা জানান, চলমান পরিস্থিতি থেকে দ্রুত নিরসনের কোনো সম্ভাবনা নেই। তীব্র গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। জ্বালানি সংকট ছাড়াও বিদ্যুৎ কম উৎপাদনের আরও একটি বড় কারণ কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়া। এ কারণে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের চারটিই বন্ধ হয়ে গেছে। আবার গ্যাস ও জ্বালানি তেলের অভাবেও অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতেও উৎপাদনপ্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় টানা বৃষ্টি না হলে লোডশেডিং কমার সম্ভাবনা খুব একটা নেই।

পিডিবির চট্টগ্রাম বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্টগুলো থেকে উৎপাদন যা আসছে তা চট্টগ্রামবাসীকে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা সবদিকে ব্যালেন্স করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করছি। আর ঘাটতি যা আছে তা সব জায়গাতেই সমানভাবে বিতরণের চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।