চট্টগ্রাম: তথ্য ও নানা সরকারিসেবা জনগণের কাছাকাছি নিয়ে যেতে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার চালু করেছে সরকার। এসব সেন্টারের সব ধরণের সেবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেওয়া হলেও ব্যতিক্রম চন্দনাইশ উপজেলার জোয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী রোকন।
স্থানীয়দের অভিযোগ জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী রোকন ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি ফাইবার অপটিক লাইন ও সার্ভার নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে গেছেন। মূল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় খালি রেখে ব্যক্তিগত কার্যালয়েই অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ তৈরি করেছেন তিনি।
এতে হুমকির মুখে পড়েছে জাতীয় তথ্যভান্ডার। একইসঙ্গে, তার ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র সহ উপজেলা পর্যায়ে ডিজিটাল সেবা গ্রহণে গ্রামের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিভিন্ন মহলের আশঙ্কা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে নিজের অফিসেই সরকারি ফাইবার অপটিক সার্ভার বসিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান রোকন। এক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-কানুন ও নীতিমালার কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশে অনীচ্ছুক জোয়ারা ইউনিয়নের একাধিক ভুক্তভোগী জানান, চেয়ারম্যান সবকিছু তার ব্যক্তিগত অফিসে নিয়ে গেছেন। ইউনিয়ন পরিষদে কোনো কাজ হয় না। জন্মনিবন্ধন সেবা তার অফিস থেকে দেওয়া হয়। তবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সেবা বঞ্চিত জোয়ারা ইউনিয়নবাসী।
জোয়ারা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও চট্টগ্রামের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বলেন, চেয়ারম্যান কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের অফিসকেই অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছেন। প্রভাব খাটিয়ে সেখানেই স্থাপন করেছেন ডিজিটাল সেন্টার। কেউ প্রতিবাদ করলে তিনি কোনো ধরনের সেবা থেকে বঞ্চিত হন।
তবে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় নিজের ব্যক্তিগত জমিতে অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় তৈরি করেছেন বলে জানান জোয়ারা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. সরওয়ার উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের অবস্থা খুবই শোচনীয়। একটু বৃষ্টি হলেই সেখানে পানি হয়, ছাদের পলেস্তারা খসে পড়তেছে। পলেস্তারা খসে পড়া অংশ দিয়ে অল্প বৃষ্টিতেও চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে। তাই সেখানে অফিস করা কঠিন। তবু সেখান থেকে যতটুকু পারা যায়, সেগুলো করা হয়। বাকি কাজ অস্থায়ী কার্যালয় থেকে পরিচালনা করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন চৌধুরী রোকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অফিসে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবগত নই। তদন্ত করে দেখবো৷ অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি