চট্টগ্রাম: মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, চট্টগ্রাম সম্প্রীতির নজির গড়েছে। রথযাত্রা উৎসবে সবাই অংশগ্রহণ করছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকালে ৪টায় কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও ধর্মীয় গোঁড়ামি প্রতিরোধে আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় নেতাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি। সাম্প্রদায়িক হামলা উস্কে দিতে গুজব সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। সকলকে গুজবের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে।
ঋষিধাম অধিপতি ও তুলসীধামের মোহন্ত শ্রীমৎ দেবদীপ পুরী মহারাজের পৌরহিত্যে দুইশ বছরের প্রাচীন নন্দনকানন রথের পুকুর পাড়ে কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসব উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
তিনি বলেন, অভীষ্ট লক্ষ্যের পথ অতি দুর্গম। এজন্য উপযুক্ত ‘যান’ প্রয়োজন। ‘রথ’ পথযাত্রার একটি প্রকৃষ্ট যান। এ রথের সুযোগ্য চালক বা সারথি প্রয়োজন, তার সঙ্গে প্রয়োজন শক্তিশালী তথা বিশ্বস্ত অশ্ব ও সুদৃঢ় লাগাম।
কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি রঞ্জন প্রসাদ দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন তুলসীধাম পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি প্রণত মিত্র চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভারতীয় সহকারী হাই-কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মানিশ সিং, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, শৈবাল দাশ সুমন ও পুলক খাস্তগীর, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, মিথুন মল্লিক, সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কিষাণ চৌধুরী, সমাজসেবক লিটন ধর, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রণব সাহা, চট্টগ্রাম ইসকন’র যুগ্ম সম্পাদক মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, যোগেশ্বর চৌধুরী। অনুপম দেবনাথ পাভেলের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক প্রণব মিত্র চৌধুরী, অধ্যাপক স্বপন চৌধুরী, উৎসব কমিটির কর্মকর্তা শ্যামদাশ ধর, বিধান ধর, ডা. মনোজ চৌধুরী, সোনারাম ধর, দীপক বণিক, চন্দ্রনাথ পাল, শান্তময় দাশ, হিরন্ময় ধর, হরিশংকর ধর, চন্দন ধর, শিবু প্রসাদ ধর, প্রদর্শন দেবনাথ, অমিত সেনগুপ্ত, সঞ্জিত চন্দ্র দেবনাথ, রতন দেবনাথ, ডা. বিবরণ দাশ প্রমুখ।
এসময় অতিথিদের কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উৎসব উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। অতিথিরা তুলসীধামের স্মরণিকা ‘তপোবন’ রথযাত্রা সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন।
শ্রীশ্রী মদনমোহন নরসিংহ গোপাল জীও’র মন্দির থেকে ঢোলক বাদ্য, মঙ্গল শঙ্খ ও উলুধ্বনি দিয়ে শ্রীজগন্নাথ-সুভদ্রা ও বলভদ্র দেবকে রথারোহণ করানো হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে ও রথের রশি টেনে রথপরিক্রমা শুরু করেন তুলসীধামের মোহন্ত এবং অতিথিরা।
কেন্দ্রীয় রথের সঙ্গে মহাশোভাযাত্রা সহকারে মনোহরখালীর রথ, টেকপাড়ার রথ, সদরঘাট মাইজপাড়ার রথ, শাহাজীপাড়ার রথ, পার্বতী ফকির পাড়ার রথ, কেদারনাথ তেওয়ারী কলোনির রথ, টাইগারপাস জগন্নাথ সংঘের রথ, সুপ্রভাত বয়েজ ক্লাবের রথ, গঙ্গাবাড়ির রথ, পাথরঘাটা গিরিধারী মন্দিরের রথ, হাজারী লেইন শ্রীকৃষ্ণায়ণ এর রথ এবং ইপিজেড শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের রথসহ ১৫টির অধিক বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের রথসমূহ পরিক্রমায় অংশ নেয়।
এদিকে তুলসীধামে রথযাত্রা উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিল- নামযজ্ঞ, মদনমোহন পূজা, জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলভদ্রের পূজা, মহাপ্রসাদ বিতরণ। সকাল থেকে অদ্বৈত-অচ্যুত চিকিৎসক ফোরামের উদ্যোগে দেওয়া হয় চিকিৎসাসেবা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৪ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২৩
এমআর/টিসি