চট্টগ্রাম: সারাদেশের যোগাযোগব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে ভূমিকা রাখছে হাইওয়ে পুলিশ। বিশেষ করে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে দায়িত্ব বেড়ে যায় পুলিশের এই স্বতন্ত্র ইউনিটটির।
আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পশুবাহী যানবাহনের নিরাপদ চলাচল ও চাঁদাবাজিমুক্ত মহাসড়ক নিশ্চিত করতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কোথাও কোনও সংগঠন বা কোনও চক্রকে চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না।
এছাড়া আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচল, যাত্রীর নিরাপত্তা এবং ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ ও স্বস্তির ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। ইতিমধ্যে বিভিন্ন যানবাহনের মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় সভা হয়েছে।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের অধীনে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও কক্সবাজারসহ সবমিলিয়ে ২২টি থানা ও ফাঁড়ির ২ পালায় ৬৬টি পেট্রোল টিমের পাশাপাশি কোনও জরুরি কাজ সামাল দিতে মাঠে থাকছে ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম। দুর্ঘটনা বা প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ৫টি সরকারি ও ১২টি বেসরকারি রেকার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুলেন্স থাকছে দুর্ঘটনায় হতাহতদের সেবার জন্য। এই সময়ে মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনও যানবাহন না থামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে। পাশাপাশি ২টি গোয়েন্দা টিম কাজ করবে ঈদের আগে ও পরের সপ্তাহব্যাপী। একটি পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি থাকবে ৫টি সাব কন্ট্রোল রুম। হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের পাশাপাশি এবারও বিশেষ ইউনিফর্মে থাকবে হাইওয়ে কমিউনিটি পুলিশিং এর ১০০ প্রশিক্ষিত সদস্য। এবারও হাইওয়ে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ নিজেই একটি স্পেশাল টিমসহ মহাসড়কের শৃঙ্খলা তদারকি করবেন বলে জানিয়েছেন।
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনা করে আমরা বিভিন্ন প্রস্তুতি এরই মধ্যে গ্রহণ করেছি। পণ্যবাহী বা গরুবাহী ট্রাক যাতায়াত করবে। সেসব যানবাহনের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে থানাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের অধীনে ৮২১ কিলোমিটার জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কোথাও কোনও সংগঠন বা কোনও চক্রকে চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া মাত্রই নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। এছাড়াও নির্দিষ্ট গন্তব্য ব্যতীত কোরবানির পশুবাহী গাড়ি ভিন্ন কোনও জায়গায় জোরপূর্বক নামানো যাবে না। প্রয়োজনে হাইওয়ে পেট্রোল সেই গাড়িকে তার নির্দিষ্ট হাটে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও দুর্ঘটনা না ঘটলে ঘরমুখো মানুষকে এবারও স্বস্তির ও নিরাপদ ঈদযাত্রা উপহার দিতে পারবো বলে আশা করি। এছাড়াও বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা মহাসড়কে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছে। মহাসড়কগুলোতে স্পিড গানের ব্যবহার আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মহাসড়কগুলোকে বেছে নিয়ে বেপরোয়া গতির গাড়িকে স্পিড গানের মাধ্যমে শনাক্ত করা হচ্ছে। যেসব মহাসড়কে যে গতি নির্ধারণ করা হয়েছে তার বেশি গতিতে চলাচলকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ বিশেষ নজর রাখছে।
চট্টগ্রাম হাইওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাসিম খান বাংলানিউজকে বলেন, মহাসড়কের আশেপাশে গরুর হাটগুলোতে জোর করে কোনও ইজারাদার যেন গরুর ট্রাক থেকে গরু নামাতে না পারে সে বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া গরুর ট্রাকে চাঁদাবাজির কোনও ঘটনা ঘটলে, চাঁদাবাজির সঙ্গে হাইওয়ে পুলিশের কোনও সদস্যের বিষয়ে অভিযোগ এলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে মহাসড়কে গরুর বাজারকেন্দ্রিক কোনও ধরনের যানজট হবে না। ঘরমুখো মানুষকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ঈদ আনন্দে সহায়তা করার জন্য যাতায়াতের পথ নির্বিঘ্ন করতে চট্টগ্রামে হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা মাঠে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
এমআই/টিসি