চট্টগ্রাম: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও সুকান্ত ভট্টাচার্য বাঙালির মানস গঠনে অপরিহার্য ভূমিকা রেখেছেন। তাদের রচনা সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদসহ অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আলোকবর্তিকা হিসেবে আমাদের পথনির্দেশনা করে চলছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ আয়োজিত রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তজয়ন্তীতে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সংস্কৃতিকর্মীদের প্রদীপ প্রজ্বালন ও উদীচী শিল্পীকর্মীদের পরিবেশনায় ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’ গান দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তের সৃষ্টিশীল প্রতিভার ওপর কথামালা উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অসীম বিকাশ দাশের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ। আলোচক ছিলেন শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, ডা. অসীম চৌধুরী প্রমুখ।
আলোচকরা বলেন, বাঙালি জাতির প্রতিটি অর্জনের মধ্যে রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তের সৃষ্টি-সম্মিলন এমন এক দ্যোতনা তৈরি করে দিয়েছেন যা সমাজ ও রাজনীতির বিমানবিক উপাদান-উদ্যেগের বিরুদ্ধে সচেতন প্রতিরোধে উৎসাহী করে তোলে।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর দর্শন ও চেতনায় সাম্প্রদায়িকতা, অপসংস্কৃতি, লুটপাট ও শোষণনির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণে বিপুল শক্তি জোগায়। সাম্যর কবি, দ্রোহের কবি নজরুল ইসলামের চেতনায় আমরা অশুভ এবং অসত্যের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উৎপাটন, অগ্নিস্ফুলিঙ্গ প্রতিবাদের প্রেরণা জোগায়।
রাশেদ রউফ বলেন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জন্মলগ্ন থেকেই একটি উদার মানবিক সাম্যবাদী সমাজের লক্ষ্যে শোষন, নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক জাগরণ তৈরিতে সচেষ্ট। সে তৎপরতায় রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত কবিত্রয়ের অনন্য সৃষ্টি ও জীবনদর্শন শক্তি ও প্রেরণা হিসেবে আমাদের পথ দেখায়।
আলোচনা সভা শেষে কবিতা আবৃত্তি করেন মিলি চৌধুরী, সঞ্জয় পাল ও শামীমা ইয়াসমিন। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ডান্স, সৃষ্টি কালচারাল একাডেমি ও সঞ্চারী নৃত্যকলা একাডেমি। সবশেষে দলীয় সংগীত পরিবেশন করে উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের শিল্পীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি