চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: 'আমাদের জনজীবনে নৌপথ' প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, রিভার ক্লাব ও গ্রীন ভয়েসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে নদী সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চবির লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার হয়।
ইমাম হাসান সৈকত ও নওশীন তাসনিম নিঝুম এর সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে।
এছাড়া অতিথি ছিলেন মেরিন সায়েন্স এন্ড ফিসারিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল, বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল সারোয়ার, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ, নৌ পুলিশ এসপি এএফএম নেজাম উদ্দিন, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গ্লীন প্লানেটের প্রতিষ্ঠতা মিজানুর রহমান, প্রকৃতি ও জীবন এর সমন্বয়ক চৌধুরী ফরিদ, হালদা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক শামছিল আরেফিন বলেন, বাংলাদেশের আদালতে নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ জীবন্ত সত্তা খালে পরিণত হওয়ার আগেই আমাদেরকে সচেতন হতে হবে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে প্রানিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, হালদা বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র, যা শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একক নদী হিসেবে সর্বোচ্চ অবদান রেখে আসছে এ হালদা নদী। এ কারণেই হালদা নদীকে 'বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ' হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া তিনি হালদা নদী সংরক্ষণে আইডিএফ, পিকেএসএফ, নৌ পুলিশ, হালদা নদী রিসার্চ ল্যাবরেটরি এবং ২০১৬ সাল থেকে নদী ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
মূখ্য আলোচক কবির বিন আনোয়ার বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে হবে। জানতে হবে কিভাবে স্মার্ট উপায়ে নদী রক্ষা করা যায়। আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে রক্ষা পাবে নদী দূষণসহ নানা অনিয়ম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক নদী সংশ্লিষ্ট কাজে। হালদা নদী রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার বদ্ধপরিকর যেকোনও প্রয়োজনে পাশে থাকার।
চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চাইলেই অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ মতো হালদাকেও রক্ষা করতে পারি। শুধু সচেতনতাই না, আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করতে পারলেই এগিয়ে যাবে দেশ।
চৌধুরী ফরিদ বলেন, কর্ণফুলী নদীর গভীরতা আগে ছিল ৯০০ মিটারের বেশি। যা বর্তমানে ৪৫০ মিটারে নেমে এসেছে। নদীর তলদেশে ১৮-২০ ফুট ঢেকে গিয়েছে চট্টগ্রাম নগরের দূষণের কারণে। সকল নদী ও প্রকৃতি রক্ষা করার মধ্যমেই আমরা আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষিত নদী, নগর ও দেশ উপহার দিতে পারি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, শিক্ষার্থীদের নদী বান্ধব হতে হবে। নদী রক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাই পারে আগামীতে সুন্দর ও স্বচ্ছ ধারার নদীর প্রবহমান চিত্র বজায় রাখতে।
সেমিনারে আয়োজকদের মধ্য থেকে ক্লাব পরিচিতি, কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপনা করেন গ্রীন ভয়েস এর সাধারণ সম্পাদক মোস্তাঈন বিল্লাহ ও রিভার ক্লাবের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল আশেক।
সেমিনারের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়ার সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনার সমাপ্ত হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টাযয় চবির লাইব্রেরি চত্বরে নদী সচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫
এমএ/পিডি/টিসি