চট্টগ্রাম: অবসর, স্বেচ্ছায় চাকরি ত্যাগ, মৃত্যুসহ নানা কারণে পদ শূন্য হতে থাকলেও নানা জটিলতায় নিয়োগ করতে না পেরে নগরসেবা অব্যাহত রাখতে হিমশিম খাচ্ছে জনবল সংকটে ভোগা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২০০ জন কর্মচারী অবসর নিয়েছেন।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ৪ হাজার ২২৬টি স্থায়ী পদের বিপরীতে মাত্র ২ হাজার ৬৩৫ জন কাজ করছেন।
বর্তমানে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি আড়াই হাজার কোটি টাকার ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কগুলো উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্প এবং ২৬৭ কোটি টাকার কোভিড প্রকল্পের মতো বড়ো প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চসিক। প্রকল্প দুটিতে প্রায় ১৫০০ স্কিম থাকলেও, প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত জনবলও নেই। এদিকে করপোরেশনের কার্যক্রম ও জনগণের সেবার চাহিদাও দিনদিন বাড়ছে।
২০২০ সাল থেকে পত্রিকায় ৩ বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও শ্রমিক সংগঠনের আন্দোলন ও উচ্চ আদালতের মামলা জড়িত কারণে নিয়োগ দিতে পারেনি চসিক। এ সময় চসিকে বিভিন্ন সময় অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া ছাড়া নতুন করে লোক নিয়োগ দেওয়া যাবে না দাবিতে আন্দোলনে নামে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
ফলে শূন্যপদে নিয়োগ অপরিহার্য হয়ে পড়লেও এসব প্রতিকূলতার কারণে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে লোক নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না চসিকের। ফলে জনবল সংকটে ভোগা চসিকের পক্ষে কাঙিক্ষত সেবাপ্রদান ক্রমশ কঠিনতর হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতিতে বিকল্প কোনো পথ খোলা না থাকায় মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত ২ হাজারটি অস্থায়ী শ্রমিকের শূন্যপদগুলোতে লোক নিয়োগ দিয়ে সেবা কার্যক্রম সচল রাখার চেষ্টা করছে চসিক। অস্থায়ীভাবে নিয়োগের ক্ষেত্রে কাজ নেই মজুরি নেই (নো ওয়ার্ক নো পে) ভিত্তিতে শ্রমিক পদে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে নিয়োগ সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিক হবে এবং কোনোরূপ কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে করপোরেশন কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে এ ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে । অর্থ্যাৎ, নিয়োগের শর্তানুসারে চসিক কর্তৃপক্ষ চাইলে এসব অস্থায়ী নিয়োগ যেকোনো সময় বাতিল করতে পারবে। অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া কেউ চাকরিসংক্রান্ত বিষয়ে চসিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করতে পারবেন না।
চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, নগরের পরিধি, জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সীমিত জনবল দিয়ে নগরবাসীর সেবা দিতে চসিককে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্থায়ী চাকরিজীবীরা যে আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করেন অস্থায়ী চাকরিজীবীদের এক্ষেত্রে ঘাটতি থাকে। এমনিতে চসিকের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগ সারা দেশে ব্যতিক্রম। এ অবস্থায় সুনাম ধরে রেখে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে হলে স্থায়ী পদে নিয়োগের বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে মাননীয় মেয়র মহোদয় কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি