চট্টগ্রাম: জমে উঠছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বইমেলা। নগরের মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় সপ্তাহব্যাপী এ মেলা চলছে।
রোববার (১৫ অক্টোবর) মেলার দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন স্টলে খ্যাতনামা লেখকদের বই খুঁজতে পাঠকের ভিড় দেখা গেছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ যুবক ও তরুণ প্রজন্মের বইপ্রেমীরা মেলার স্টল থেকে তাদের পছন্দের বই কিনছে।
বইমেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনী সংস্থা ৭৫টি স্টল রয়েছে। বাংলা একাডেমিসহ সরকারি প্রকাশনী সংস্থার ১০টি, জাতীয় পর্যায়ের ৪৭টি প্রকাশনী সংস্থা ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ১৭টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর,প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের স্টলগুলো হচ্ছে- অনিন্দ্য প্রকাশ, অনন্যা, কাব প্রকাশনী, কোয়ান্টাম, কাকলী প্রকাশনী, শিরীণ পাবলিকেশন্স, ঐতিহ্য, তাম্রলিপি, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, উজান, আগামী প্রকাশনী, অনুপ্রাণন প্রকাশনী, কিন্ডারবুকস, শিলা প্রকাশনী, মাওলা ব্রাদার্স, মক্কা পাবলিকেশন্স, নালন্দা, মাতৃভাষা প্রকাশ, মেরিট ফেয়ার প্রকাশন, আহমদ পাবলিশিং হাউস, জনতা প্রকাশ, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড, স্টুডেন্ট ওয়েজ, মেসার্স প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা, বিআইআইটি পাবলিকেশন্স, ঝিঙেফুল, কথা প্রকাশ, আদর্শ, মাদার্স পাবলিকেশন্স, অন্বয় প্রকাশন, প্রিয়মুখ প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ, ঝুমঝুমি প্রকাশন, শিখা প্রকাশনী, গ্রন্থরাজ্য, অন্যধারা, শব্দশৈলী, রুশদা প্রকাশ, হাওলাদার প্রকাশনী, গ্রন্থ কুটির, অন্বেষা প্রকাশন, বাতিঘর, বইবাজার প্রকাশনী, আকাশ, ইউনিভর্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল), উত্তরণ, বাঁধন পাবলিকেশন্স, কালধারা প্রকাশনী, বলাকা প্রকাশন, রাদিয়া প্রকাশন, আবীর প্রকাশন, শব্দশিল্প প্রকাশন, ইতিহাসের খসড়া, প্রজ্ঞালোক প্রকাশন, বিদ্যানন্দ প্রকাশনী, তৃতীয় চোখ, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন, চন্দ্রবিন্দু, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিমিটেড, দ্বীন দুনিয়া প্রকাশন, অ্যামেলিয়া প্রকাশন, নন্দন বইঘর, সাহিত্য বিচিত্রা ও গাজী প্রকাশনী।
মেলায় প্রতিদিন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে রচনা, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমির অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বইমেলা শেষ হবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বইপড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা, গবেষকদের সহায়তা ও উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে বইমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বিভাগীয় পর্যায়ে এই বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেন, অনুষ্ঠানে, উন্নত জাতি গঠনে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি মানুষই এক একটি বই। মানুষ বেঁচে থাকবে না, কিন্তু বই থাকবে। উন্নত জাতি গঠনে তরুণ প্রজন্ম ও যুব সমাজকে বইমুখী করতে হবে। তাহলে সন্তানেরা মাদকসহ অন্যান্য অপকর্ম থেকে সরে আসবে। বই শুধু জ্ঞান বিকাশের হাতিয়ার নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে আরও বেগবান করে। জ্ঞানকে ধরে রাখতে হলে পড়তে, বলতে, লিখতে ও জানতে হবে।
তিনি বলেন, বই পড়ে যারা জ্ঞান অর্জন করতে চাই তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একদিন মানবিক মানুষ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞানার্জনের শেষ নেই। জাতিকে শিক্ষিত করতে হলে বেশি বেশি বই পড়তে হবে। এজন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তরুণ ও যুব সমাজেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার মাধ্যমে মানবিক জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আমরা একদিন উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি