চট্টগ্রাম: সর্বনিম্ম ৫৫ টাকা দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে কক্সবাজার ভ্রমণ করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী দফতরে এমনটাই প্রস্তাবনা দিয়েছে রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ।
আগামী ১১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতের ছোঁয়ায় দ্বার উন্মোচিত হবে দোহাজারী কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের।
নবনির্মিত এ পথে ট্রেনের ভাড়া চূড়ান্ত করেছে রেলওয়ে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫১৫ টাকা, এসি সিটে ৯৮৪ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এসি সিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাটসহ এসি কেবিনে ১ হাজার ৩৬৩ টাকা। এসি বার্থে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৬ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫৫ ও সর্বোচ্চ ৭৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আগের ভাড়ার সঙ্গে নতুন এ ভাড়া যুক্ত করে শিগগিরই ঢাকা-কক্সবাজারের ট্রেন ভাড়া অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেলপথে যাত্রীবাহী দুটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব থাকলেও, ঢাকা থেকে এ রুটে শুরুতে দিনে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলবে।
জানা গেছে, এ রুটে শোভন চেয়ারে ৫১৫ ও এসি সিটে ৯৮৪ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এসি সিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাটসহ এসি কেবিনে ১ হাজার ৩৬৩ ও এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২ হাজার ৩৬ টাকা
রেলওয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, দিনে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করবে। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে ট্রেনটির।
কক্সবাজার রুটে যে ট্রেনটি চলবে সেটির ছয়টি নাম প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে। এগুলো হলো ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’, ‘হিমছড়ি এক্সপ্রেস’, ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’, ‘ইনানী এক্সপ্রেস’, ‘লাবণী এক্সপ্রেস’ ও ‘সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাম চূড়ান্ত করবেন।
ট্রেনে দুটি খাবার বগি, একটি পাওয়ার কার, তিনটি এসি কেবিন, পাঁচটি এসি চেয়ার, ছয়টি শোভন চেয়ার এবং একটি নন-এসি ফার্স্ট সিট বগি থাকবে। ঢাকা থেকে যাত্রার সময় আসন সংখ্যা হবে ৭৯৭। ফিরতি পথে আসন হবে ৭৩৭। আপাতত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশিথার বগি দিয়ে চালানো হবে ঢাকা-কক্সবাজারের ট্রেন।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পটি ২০১০ সালে অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প সংশোধনে ব্যয় বেড়ে হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ খরচ ১৫ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। কক্সবাজার-ঘুমধুম ২৮ কিলোমিটার রেলপথ মিয়ানমারের আপত্তিতে এখনও নির্মাণ শুরু করা যায়নি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথের ভাড়া নির্ধারণের কাজ শুরু হয়েছে। ১০০ মিটারের বেশি সেতুগুলোর পন্টেজ চার্জ যুক্ত করেই ভাড়া নির্ধারণ করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো দীর্ঘ দূরত্বের সেতু কিংবা উড়াল সড়ক বা ভায়াডাক্ট না থাকায় ঢাকা-কক্সবাজার যাতায়াতের ট্রেনের ভাড়া তুলনামূলক কমই থাকবে। তবে উদ্বোধনের আগেই নতুন এ রেলপথের বিভিন্ন ট্রেনের ভাড়া ঘোষণা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি