চট্টগ্রাম: নগরের চান্দগাঁও থানায় পুলিশ হেফাজতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে ওই থানায় মামলায় তানিয়া সুলতানা প্রকাশ কলি আক্তারকে (১৯) কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) চট্টগ্রামের মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ারের চান্দঁগাও থানার দায়ের করা মামলায় তানিয়া সুলতানা প্রকাশ কলি আক্তার আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে নগরের চান্দগাঁও থানায় পুলিশ হেফাজতে অবসরপ্রাপ্ত দুদক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি),পরিদর্শক (তদন্ত) ও এএসআইসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি থানায় রেকর্ড করার জন্য নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৮ অক্টোবর চান্দঁগাও থানায় থানায় মামলাটি দায়ের করেন ফৌজিয়া আনোয়ার।
মামলার আসামিরা হলেন, চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুর রহমান, চান্দগাঁও থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীম (৩৭), মো. লিটন (৪৮), রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক (ডিডি) পদ থেকে অবসর নেন। তিনি নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তার বিরোধের জের ধরে গত ২৯ আগস্ট ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া। মামলার শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ওইদিনই অপরাধ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। ওই সমন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন অর রশীদ গায়েব করে ফেলেন। ফলে আসামিরা আদালতে হাজির হওয়ার সমন পাননি। এরপর মামলার পরবর্তী তারিখ দেন আদালত। ওই তারিখে মামলার বাদী হাজির না হওয়ায় তার আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু ওইদিনই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে দেন। এরপর গত ৩ অক্টোবর রাতে শহীদুল্লাহকে বাসা থেকে আদালতের ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেফতার করে নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ। থানায় নেওয়ার পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী শহীদুল্লাহকে নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে কয়েকঘণ্টার মধ্যে ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি