চট্টগ্রাম: ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঁশখালী হানাদার মুক্ত হয় ১২ ডিসেম্বর। চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৪ দিন আগে পাক-হানাদারদের রুখে দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিকামী জনতা।
পাক হানাদার বাহিনী বাঁশখালীতে প্রথম অভিযান চালায় ১৯৭১ সালের ১৯ মে।
বিভিন্ন গ্রামে ৯০ জন সংখ্যালঘু নারী-পুরুষকে হত্যা করা হয়। শহীদ হয়েছেন বাঁশখালীর আরও ১০ জন বীর যোদ্ধা। এই শহীদদের মধ্যে কালীপুর ইউনিয়নের ১৮ জনকে হাত-পা বেঁধে বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের দক্ষিণ পাশে গর্তে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে আছেন- শহীদ সুরেন্দ্র কুমার চক্রবর্তী, তারক চন্দ্র দত্ত, হীরেন্দ্র পাল, চিত্তরঞ্জন দাশ, সরোজ কান্তি দত্ত, মনোরঞ্জন দে, দ্বিজেন্দ্রলাল ভৌমিক, পেটান চন্দ্র দে, জগদিন্দু দত্ত, সরোজ কান্তি চৌধুরী, মানিক চন্দ্র পাল, বিমল কান্তি ঘোষ, রজনীকান্ত দেবনাথ, অরুণ কুমার দেবনাথ, যোগেশ চন্দ্র পাল।
এ বধ্যভূমিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীনের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালের ১৫ মার্চ একটি গণসমাধির ভিত্তিস্থাপন করা হয়। ২৬ মার্চ গণসমাধির ফলক উন্মোচন করেন বাঁশখালীর তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান সুজিত কান্তি সিকদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জালাল আহমদ।
বাণীগ্রামে শহীদ ২২ জনকে রাতের অন্ধকারে বাণীগ্রাম মধ্যপাড়া পুকুর পাড়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে এই শহীদের স্মরণে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর নামফলক সম্বলিত স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এমএফ কমান্ডার খোন্দকার মোহাম্মদ ছমিউদ্দীন। ২০১২ সালের ২৬ মার্চ এই স্মৃতিস্তম্ভ ফলক উন্মোচন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক।
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও সাধনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে এম সালাহ্উদ্দীন কামাল বলেন, বধ্যভূমি দুটি সংরক্ষণে আমি জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজ মাঠে নির্মিত হচ্ছে স্মৃতিসৌধ।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১১ শতক জায়গায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলে আরেকটি বধ্যভূমির কাজও শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৩
এমআই/এসি/টিসি