ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিক্ষক সমিতির সভাপতির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ালেন চবি উপাচার্য

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩
শিক্ষক সমিতির সভাপতির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ালেন চবি উপাচার্য ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: 'এটা একটা পবিত্র রুম। এখানে অযৌক্তিক কথা বলবেন না।

আপনি চিঠি দিয়েছেন, আমি চিঠি নিলাম। কিন্তু চিঠিতে আপনি কথাগুলো না লিখলে আমি রাগ করতাম না।
আপনি কেন এখনো ফারসি ভাষা (ফারসি বিভাগের নিয়োগ ক্যালেঙ্কারী) নিয়ে পড়ে আছেন? আমি কি রাস্তার মানুষ? আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা চুরি করে খেয়েছি? বিশ্ববিদ্যালয় বিক্রি করে দিয়েছি আমি? আমি ধমক দিচ্ছি না, আমি দুঃখের সঙ্গে বলছি। '

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগবোর্ড বাতিলের দাবিতে শিক্ষক সমিতি অবস্থান নিলে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন।  

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন চবি উপাচার্য।

এর আগে দিনভর এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেখা যায় শিক্ষকদের মধ্যে। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষক সমিতির নেতারা নিয়োগ বাতিলের দাবিতে চিঠি দিতে যান উপাচার্যের কার্যালয়ে। এসময় দুপক্ষ চরম বাকবিতণ্ডায় জড়ান। দাবিতে অনড় থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উপাচার্য দফতরে অবস্থান নেন অর্ধশতাধিক শিক্ষক।

পরে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে উপাচার্যের বাংলোতে নিয়োগ বোর্ডের স্থানান্তর করলে সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। এসময় উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদত্যাগের একদফা দাবিতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দুই ঘণ্টা অবস্থান নিবেন শিক্ষকরা।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, কাউকে কিছু না জানিয়ে বাংলোতে গিয়ে ভাইভা নেওয়াটা নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগেও আমরা বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিদাওয়া জানিয়ে আসছি। তবে প্রশাসন সেদিকে কর্ণপাত করেনি। অন্যায়কে বাস্তবায়ন করার জন্য আজ যে গর্হিত কাজ উপাচার্য করেছে তা আইনের পরিপন্থি। এ ঘটনায় উপ-উপাচার্যেরও দায় আছে বলে আমরা মনে করি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, আমরা উপাচার্যকে বোঝানোর জন্য গেলে তিনি কথা পর্যন্ত বলেননি। একপর্যায়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

নিয়োগ বোর্ডের সদস্য আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত। এ প্রক্রিয়ায় আগেও নিয়োগ হয়েছে। তারা উপাচার্যকে ক্ষমতা থেকে সরানো ও বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে।  

এদিন শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্যকে আইন ও বাংলা বিভাগের নিয়োগবোর্ড বাতিলের দাবিতে চিঠি দিতে গিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী চিঠি পাঠ করার একপর্যায়ে উপাচার্য উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে উপাচার্যপন্থি ও শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা বাগবিতণ্ডায় জড়ান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্য দফতরে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এ সময় প্রশাসনপন্থি শিক্ষকরা কয়েক দফায় উপাচার্য দফতর থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন।  

এদিকে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠেয় নিয়োগবোর্ড থেকে চার সদস্যের মধ্যে দুইজন অংশ নিবেন না বলে উপাচার্য বরাবর এক চিঠিতে জানান। এ দুইজন হলেন, বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মহিবুল আজিজ। পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩
এমএ/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।