চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনটি জোটগতভাবে জাতীয় পার্টি ছাড় পেলেও স্থানীয় পর্যায়ে বিভক্ত আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে ঠেকাতে একাট্টা ঠেকাতে তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমদু লাঙল, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান কেটলি, নাছির হায়দার করিম ঈগল, তৃণমূল বিএনপির নাজিম উদ্দীন সোনালী আঁশ, ইসলামী ফ্রন্টের মোখতার আহমদ মোমবাতি, সুপ্রিম পার্টির কাজী মহসিন একতারা, বিএনএফ প্রার্থী আবু মো. শামসুদ্দীন টেলিভিশন ও ইসলামিক ফ্রন্টের হাফেত আহমদ চেয়ার প্রতীক। এই আসনটি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড ও হাটহাজারী উপজেলা নিয়ে গঠিত।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয় উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিকে এই আসন ছেড়ে দেয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয় সালামকে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ লাঙল প্রতীক নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা তিন জাতীয় নির্বাচনে জোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছাড় দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। তখন আওয়ামী লীগের আর কোনো প্রার্থী না থাকায় অনেকটা খালি মাঠে গোল দেন আনিস। তবে এবার চিত্র ভিন্ন। এবার তাকে আর ছাড় দিতে চান না স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তাদের সবার এখন একটাই টার্গেট ‘আনিস ঠেকাও’ নীতি অবলম্বন করছেন। যার কারণে এখনও পর্যন্ত ব্যারিস্টার আনিসের প্রচার প্রচারণায় দেখা মিলেনি উপজেলা আওয়ামী লীগ বা অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ কোন নেতার। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তার সাথে স্থানীয় নেতাদের দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। ফলে ভোটের মাঠে তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে পাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও অনেক নেতা নীরবে সমর্থন দিচ্ছেন। পাশাপাশি শাহজাহানের ব্যানার, পোস্টার আর শোডাউনে তাঁর অবস্থান জানান দিচ্ছেন। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকায় দলের নেতাকর্মীদের তার জন্য কাজ করবেন-এমন দাবি তাঁর।
এর বাইরে ইসলামিক দলের বড় প্রভাব আছে এই আসনে। মোমবাতি প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন অ্যাডভোকেট মোক্তার। এর বাইরে চাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ফোরামের ব্যানারে সোনালী আঁশ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তাদের সাথে ভোটের মাঠে লড়াই করে কতটুকু নিজেকে ফের সংসদে নিয়ে যেতে পারবেন সন্দেহ স্থানীয়দের। এছাড়াও হাটহাজারী আসনে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী কোনো সাংগঠনিক অবস্থান নেই। বিজয়ী হতে হলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের পাশে লাগবে আনিসের।
ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাকে সহযোগিতা করতেছে। সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক কার পক্ষে হয়ে কাজ করছে সেটা বিষয় নয়। আমার নির্বাচনে সবসময় জনগণের সার্পোট আমি পেয়ে থাকি।
হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ভোট কেন্দ্রে ভোটার বাড়ানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের বলেছি, সেই অনুযায়ী কাজ করতেছি। আমাদের কারও পক্ষে কাজ করার জন্য দলীয় নির্দেশনা নেই। নেতাকর্মীরা নিজেরা নিজেদের মতো করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পকে। স কাজ করছে।
হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি এস এম রাশেদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কোন নির্দেশনা আমাদের দেয়নি। আমি এখনো পর্যন্ত কারও পক্ষে হয়ে প্রচারণায় যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি