চট্টগ্রাম: এক যুবলীগ নেতাকে মারধর ও এর প্রতিবাদে মানববন্ধনে হামলা চালানোর অভিযোগে চকবাজার ওয়ার্ড নূর মোস্তফা টিনুর বিরুদ্ধে হয়েছে মামলা। সেই মামলা থেকে বাঁচতে এবার ভুয়া বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমকর্মীদের মেইলে এক বিবৃতি আসে, যার শিরোনাম ছিল-‘কাউন্সিলর টিনুর রিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রত্যাহারের দাবিতে দাবিতে বিবৃতি’। আর বিবৃতির নিচে বিবৃতিদাতা হিসেবে লেখা ছিল-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের কাউন্সিলরবৃন্দ।
ওই বিবৃতিতে লেখা ছিল, ‘আমরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের কাউন্সিলরবৃন্দ আমাদের সহকর্মী চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুর বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং দ্রুততম সময়ে এ মামলার প্রত্যাহারের দাবি করছি। '
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কাউন্সিলর নূর মোস্তাফা টিনু বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে ছাত্র অবস্থা থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসছেন। চট্টগ্রামের একজন জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি দিন-রাত চট্টগ্রামের শিক্ষার জোন হিসেবে পরিচিত ৪৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৪৬টি কোচিং সেন্টার সম্বলিত চকবাজারবাসীর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কাউন্সিলর নূর মোহফা টিনু চকবাজারে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে সবসময় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাঁর নেতৃত্বে স্বাধীনতবিরোধী অপশক্তির কবল থেকে চকবাজার মুক্ত হয়েছে, চকবাজার ওয়ার্ডে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বেআইনি কর্মকাণ্ড অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। ’
এতে আরও উল্লেখ ছিল, ‘আমরা মনে করি, একটি কুচক্রি মহল সরকার ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি নষ্টের উদ্দেশে কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুকে এ মিথ্যা মামলায় আসামি করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, কুচক্রি মহলটি নগরীর অতি গুরুত্বপূর্ণ চকবাজার এলাকায় বিদ্যমান শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশ বিনষ্ট করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য এই জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। ’
কিন্তু এমন বিবৃতির বিষয়ে জানেন না কাউন্সিলরা। জানতে চাইলে আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুর লাল হাজারী বলেন, ‘আমি এটার আগা-মাথা কিছু জানি না। ভুল জায়গায় কেন আমার নাম দিয়েছে জানি না। আমি এটার কিছু জানি না। ’
একই কথা বলেন লালখান বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল। তিনি বলেন, ‘আপনি যা জানতে চাচ্ছেন এটা অন্য কাউন্সিলররা দিয়েছে হয়তো। আমি জানি না। ’ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো বিজ্ঞপ্তি দিইনি। যদি কেউ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটি নিজের মতো করে দিয়েছেন। সেখানে আমাদের কোনো সম্মতি নেই। ’
পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজি মো. হারুন উর রশীদ বলেন, ‘এ ধরনের বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে আমি অবগত নই। ’
তবে বিবৃতিটি সত্য বলে দাবি করেন চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু। টিনু বলেন, ‘না না, মাননীয় মেয়র মহোদয়ের অনুমতিক্রমে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে তো আর ডেকে বলা যাবে না তাই। তারা (কাউন্সিলররা) কেন অস্বীকার করছেন আমি তো জানি না। ’
বিবৃতিতে সিল বা সই না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে টিনু দাবি করেন, ‘এটি করপোরেশনের মেইল থেকে দিয়েছে। সেজন্য পৃথক স্বাক্ষর নেই। ' যদিওবা বিবৃতিটি সিটি করপোরেশনের মেইল থেকে নয়, দেওয়া হয় ভিন্ন একটি মেইল থেকে।
নাম প্রকাশ না করে সিটি করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, এটা করপোরেশনের কোনো অফিসিয়াল বিবৃতি নয়। এই বিবৃতি তিনি (টিনু) নিজ উদ্যোগে পাঠিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৪
বিই/পিডি/টিসি