চট্টগ্রাম: ঈদে ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে থাকে পাঞ্জাবি। ঈদকে সামনে রেখে নগরের আভিজাত শপিং মল আফমি প্লাজা সাজিয়েছে বাহারি সব পাঞ্জাবির পসরা।
দেশীয় পণ্যের বিশাল আয়োজন নিয়ে মানুষের আকর্ষণ কেড়েছে নগরের প্রবর্তক মোড়ের প্রসিদ্ধ শপিং মল আফমি প্লাজা।
আজ ২২ রমজান। ঘনিয়ে আসছে ঈদ। জমে উঠেছে চট্টগ্রাম নগরের এ আভিজাত শপিং মল। প্রতিদিন দুপুর থেকে শুরু হয় কেনাকাটা। চলে গভীর রাত পর্যন্ত।
ক্রেতাদের নজর কাড়তে দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদেশি পাঞ্জাবি দোকানের সামনে প্রদর্শন করেছেন ব্যবসায়ীরা। যাতে দেখতেই ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়ে। বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রের মতো আফমি প্লাজাও সেজেছে নতুন সাজে। দেশীয় ঐতিহ্য-আধুনিকতা আর সংস্কৃতিকে লালন করে পসরা বসিয়েছে ‘দেশী দশ’। একই ছাদের নিচে দেশীয় ১০টি ফ্যাশন হাউসের সম্মিলিত ব্র্যান্ড 'দেশী দশ’।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সাদাকালো, নগরদোলা, বাংলার মেলা, কে-ক্র্যাফট, নিপুণ, বিবিআনা, অঞ্জনস, দেশাল, রঙ এবং সৃষ্টি। ক্রেতাদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন ডিজাইনে সব বয়সী মানুষের জন্য আরামদায়ক পোশাক এনেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ঐতিহ্য ও নিজস্ব স্বকীয়তায় তৈরি এসব নতুন পোশাক নজর কাড়ছে ক্রেতাদের।
আফমি প্লাজার পঞ্চম তলায় একসঙ্গে দশটি ফ্যাশন হাউস রঙবেরঙের কাপড়ের বিশাল সমাহার। প্রতিটির হাউসের আছে নিজস্ব সংগ্রহ। আধুনিকতার সমন্বয়ে সব দোকানেই দেশীয় পণ্য সাজিয়ে রেখেছেন।
ছোট থেকে বড় সবার জন্য নিত্য-নতুন সব বাহারি পাঞ্জাবি রয়েছে সুপার নুর ফ্যাশন, ঢাকার বিখ্যাত অলিভ ফ্যাশন, সানরিস ত্বনা, পেন্ডোরা লাইফ স্টাইল, টেনডেনসি, আলমিরা, এসএম বুটিকস হাউসে। এছাড়াও নারীদের জন্য দেশি সিঙ্গেল সালোয়ার কামিজ, থ্রি-পিস, শাড়ি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্টসহ শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের পোশাক স্থান করে নিয়েছে দেশী দশের শোরুমগুলোতে।
ষষ্ঠ তলায় রূপসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পারসোনা বিউটি পার্লারের কর্মীরা। অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন তারা। ঈদ উপলক্ষে তারাও বিভিন্ন রূপসজ্জা ছবি টাঙিয়ে রেখেন। যে যেভাবে সাজতে চান তাকে সেভাবেই সাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
চতুর্থ তলায় জুতা, মোবাইল এবং নারী পুরুষের দেশীয় কাপড়ের বিশস্ত প্রতিষ্ঠান বিশ্ব রং। যেখানের পাঞ্জাবি কিনতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। দেশীয় উচ্চ মার্গীয় সব পোশাকের সমাহার এখানে। তৃতীয় তলায় পু্রুষদের আধুনিক পোশাক, জুতা পারফিউম আর ডায়মন্ড হেভেন।
দ্বিতীয় তলায়, প্রসিদ্ধ পাঞ্জাবির দোকান লিবাস, সারটাজ, এনডি, আজদা, ডিভাইন, শৈল্পিক, ছোট বাচ্চাদের পোশাকের দোকান মিমি মি, এমএএস, মেয়েদের জুয়েলারি এবং জুতার দোকান অপেলিয়া, মেয়েদের থ্রিপিসের দোকান ওয়াসিফা জাহিন, বোনানজা, কটন বুটিকস, আরশী, বোরকার দোকান লেডিস ফেয়ার, আপডেট, এমিরা, মেয়েদের ব্যাগের দোকান এঞ্জেল, অনলাইন গিফট শপ।
শপিং মলে প্রবেশ করতেই দেখা মিলবে ফুলের দোকানের। যা আপনাকে ফুল দিলে বরণ করে নেওয়ার মতোই। প্রথম তলায় ঘড়ির দোকান টাইম জোন, মেয়েদের পোশাকের দোকান প্রাইড, ফ্যাশেনেবেল ড্রেস, মেয়েদের জুয়েলারি দোকান ভিক্টোরিয়া, ছেলেদের পোশাক ক্যাস্টস আই, রয়েল অ্যান্ড সান্এলাইন্স, জেন্টলম্যান, পাঞ্জাবির আর্টেক্স, গেঞ্জির দোকান লঘু। ছেলে-মেয়ে, বাচ্চা সবার দেশীয় পোশাকের সমাহার স্বদেশ পল্লীতে।
শপিং মলে আসা কয়েকজন ক্রেতারা জানান, কেনাকাটায় সময় বাঁচাতে এখানে এসেছি। একসঙ্গে একই স্থানে ১০টি ভিন্ন ভিন্ন শোরুম আছে, সেই সঙ্গে হরেক রকম ডিজাইনও এসব প্রতিষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা যায়। যাচাই-বাছাই করাও সহজে। এখানে পোশাকগুলো দেশীয় ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে লালন তৈরি করা হয়।
ক্রেতারা একটি থেকে বের হয়ে আরেকটিতে যাচ্ছেন। নেড়ে চেড়ে দেখছেন কাপড় আর বিভিন্ন নকশা। পছন্দ আর বাজেট মিলে গেলেই কিনে নিচ্ছেন।
তারা বলছেন, রমজানের শুরু থেকেই আমাদের বেচাকেনা জমজমাট। দিনের বেলায় একটু ঝামেলা কম থাকলেও রাতে জমজমাট থাকে বেচাকেনা। ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে দিনের বেলায়ও ততই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।
আফমি প্লাজায় তৃতীয় তলার 'অপশন' নামের দোকানের স্বত্বাধিকারী ইলিয়াস মালিক বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাছে পাঞ্জাবির সব নতুন আইটেম রয়েছে। আমাদের মূল টার্গেট তরুণদের বাহারি সব পাঞ্জাবির পোশাকে। তাই ভারত আর পাকিস্তানি সব নতুন কালেকশন আমাদের রয়েছে।
আফমি প্লাজার প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম খসরু বাংলানিউজকে বলেন, শান্ত সুশৃঙ্খল মনোরম পরিবেশে এখানে ক্রেতারা সবকিছুই কিনতে পারেন। সেজন্য সব বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ মার্কেট সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমাদের এখানে বিনামূল্যে পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে, শুধু কার পার্কিং রয়েছে ৯০টির বেশি। এছাড়া মোটরসাইকেল পার্কিং করা যায় শতাধিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২৪
বিই/টিসি