ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাবিতে অবাঞ্ছিত অধ্যাপককে নিয়ে চবিতে বসছে পদোন্নতি বোর্ড

মোহাম্মদ আজহার, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২৪
রাবিতে অবাঞ্ছিত অধ্যাপককে নিয়ে চবিতে বসছে পদোন্নতি বোর্ড ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: আগামী ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের পদোন্নতি বোর্ড বসার কথা রয়েছে। তবে বিতর্ক উঠেছে বোর্ডের একজন সদস্যকে নিয়ে।

যাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষার্থীরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।  

চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাবি’র মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়াকে একটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় তার আক্রমণাত্মক আচরণ, পর্যাপ্ত ক্লাস না নেওয়া ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-অবিচারের অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়ার অব্যাহতির দাবি তোলেন।

এদিকে ১৪ নভেম্বর বসতে যাওয়া চবি’র মনোবিজ্ঞান বিভাগের পদোন্নতি বোর্ডে রয়েছেন আরও ৭ জন শিক্ষক। যাদেরকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড.  শিরীণ আখতারের অনুগত এবং ফ্যাসিবাদের সহযোগী বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। এদের কারও কারও বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের নানান ট্যাগ দিয়ে দমন পীড়নে জড়িত থাকার অভিযোগও।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের পদোন্নতি বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুর মুহাম্মদ, রাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাবিনা সুলতানা, রাবিতে অবাঞ্ছিত হওয়া একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়া, ঢাবির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম, ঢাবির দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন, চবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দ্বৈপায়ন সিকদার এবং চবির রাষ্ট্রপতি মনোনিত সিন্ডিকেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর।  

জানা গেছে, বিভিন্ন বিভাগে নতুন নিয়োগ বোর্ড তৈরির জন্য চিঠি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগে পূর্বের পদোন্নতি বোর্ড বহাল রেখেই শুরু হচ্ছে পদোন্নতির প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে আরবি বিভাগ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগসহ বেশকিছু বিভাগে পূর্বের মনোনীত শিক্ষকদের দিয়েই পদোন্নতি বোর্ড ডাকার প্রক্রিয়া চলছে। পূর্বের এসব বোর্ডের সদস্যরা সবাই আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হওয়ায় তাদেরকে ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগী’ বলে দাবি করছেন শিক্ষকরা।

বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে চবির নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক ঐক্যের সমন্বয়ক ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের দ্বারা গঠিত বোর্ড স্থগিত করা উচিৎ। পাশাপাশি সৎ ও যোগ্য মানুষদের নিয়ে সকল বিভাগের পদোন্নতি এবং নিয়োগ বোর্ড পুনরায় গঠন করতে হবে। আমরা চাই, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি ও নিয়োগ দেওয়া হোক। অন্যথায় ফ্যাসিবাদের দোসররা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় যেসব বোর্ড গঠন করেছিলো, তা আমাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে।

চবি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নতুন করে পদোন্নতি বোর্ড গঠন করতে গেলে যাদের দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি আটকে আছে সেটা আরও দীর্ঘায়িত হবে। তাই পদোন্নতি বোর্ড দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এখনো নতুন করে কোনো নিয়োগ বোর্ড গঠন হয়নি। এছাড়া পুরাতন এবং নতুন আবেদনের প্রেক্ষিতে একসঙ্গে পদোন্নতি দেওয়া হলে তখন সিনিয়র-জুনিয়র সবাই সমান হয়ে যাবে।  

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব বেশি প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে প্রশাসন সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবে। পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত করা হবে নাকি নতুন বোর্ড গঠন করা হবে সেটাও তখন দেখা যাবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২৪
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।