চট্টগ্রাম: যুবদল কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেছেন, বাংলাদেশ যখন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সুখী সমৃদ্ধ ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই দেশি-বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে। পরবর্তী শাসকগোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে জিয়াউর রহমানের যে ভূমিকা, যে অবদান তা মুছে দিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরের লালখান বাজার একটি রেস্টুরেন্টে শনিবার দিনব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে সাতই নভেম্বর জড়িত জানিয়ে মোনায়েম মুন্না বলেন, এটা শুধু একটা দিবস নয়। এ দিনটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। সিপাহী-জনতা সেদিন বিপ্লবের মাধ্যমে বন্দিদশা থেকে মেজর জিয়াউর রহমানকে নেতৃত্বের আসনে বসিয়েছেন। এই দিবসকে ঘিরে যুবদল কেন্দ্রীয় এ কর্মসূচি ঢাকার পরিবর্তে এবার চট্টগ্রামে আয়োজন করছে। কারণ এ চট্টগ্রামের সাথে বিএনপি ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত। তাই আমরা ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রামে এদিনটিকে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম দেশ ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বে সমাদৃত হয়েছিল জানিয়ে মোনায়েম মুন্না বলেন, একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে বাংলাদেশকে অতি অল্প সময়ে বিশ্বের বুকে সৃমদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গঠন করেছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে বিপ্লব উদ্যান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মানুষের মনে যুদ্ধের সাহন জুগিয়েছেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়েছে। তিনি শুধু ঘোষণা দেননি, পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। এরপর নানা প্রেক্ষাপটে সাতই নভেম্বর আবারো তিনি জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে দেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, কেন্দ্রীয় যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ মুন্না, সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূইয়া, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য সাইফুর রহমান শপথ, আমিনুল ইসলাম তৌহিদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম ও সাধারণ সম্পাদক মুরাদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) কর্মসূচির প্রথমে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের প্রথম সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মাগফিরাত কামনা করা হবে। সেখান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবকদের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল ইসলাম নয়ন।
নগরের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে সকাল সাড়ে দশটায় জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার দর্শন ও আদর্শের আলোকে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক নাজিমুর রহমান। দুপুর সাড়ে ১২ টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সংলগ্ন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের শাহাদাত বরণের বেদনা সিক্ত স্মারক 'শহীদ জিয়া স্মৃতি যাদুঘর-এ এতিম শিশুদের অংশগ্রহণে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা.শাহাদাত হোসেন। নগরের ২ নম্বর গেইট বিপ্লব উদ্যানে দুপুর ২ টা রং তুলিতে আঁকা স্বাধীনতার ঘোষণার চিত্র প্রদর্শনী। সেখানে অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন। বিকেলে তিনটায় বিপ্লব উদ্যানে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থানে যুব সমাজের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে বিপ্লব উদ্যানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ এবং সমাবেশ শেষে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র অভিমুখে 'যুব পদযাত্রা'। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি