চট্টগ্রাম: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর, বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দায়িত্ব গ্রহণের ১ বছর পূর্ণ হলো। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে রুটিন কাজ করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে চসিককে।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী, ২৮ ধরনের কাজ করার সুযোগ আছে মেয়রের। এর মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নালা-নর্দমা পরিষ্কার, সড়ক মেরামত ও সড়কবাতি নিশ্চিত করা অন্যতম। এর বাইরে চসিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সেবা দিয়ে থাকে।
মানবাধিকার সংগঠক আমিনুল হক বাবু বাংলানিউজকে বলেন, নগরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। রুটিন কাজের বাইরে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। মশার জ্বালায় যখন নগরবাসী অতিষ্ঠ তখন চসিক মশার ওষুধ নির্বাচনেই বেশ সময়ক্ষেপণ করেছিল। গৃহকর বৃদ্ধি নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন নগরবাসী। সবচেয়ে মর্মান্তিক হলো- নালা, খাল, নর্দমায় প্রাণ হারিয়েছেন নানা বয়সী মানুষ। কিন্তু চসিক ছিল নির্বিকার।
চসিকের প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চসিকের মেয়র ও কাউন্সিলররা স্বাভাবিক সেবার পাশাপাশি অনেক কাজ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেকের মাধ্যমে ১০০ ভাগ জিওবি তহবিল থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন। বারই পাড়া খাল খনন হচ্ছে। চসিক জেনারেল হাসপাতালসহ নির্ধারিত টিকাকেন্দ্রের বাইরে প্রতিটি ওয়ার্ডে করোনা টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে। মশার ওষুধ নির্বাচনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি আধুনিক ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে সড়ক মেরামত, নালা পরিষ্কার, সড়ক বাতিসহ চসিকের অত্যাবশ্যক কাজের পাশাপাশি সুন্দর নগর গড়ার ব্যাপক পরিকল্পনাও নিয়েছে চসিক।
তিনি বলেন, এক বছর খুব বেশি সময় নয়, তা-ও বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ২৮টি খাল সংস্খার ও উন্নয়নে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সৌন্দর্যবর্ধনে ৪১ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের পরিকল্পনা সাজাতে বলা হয়েছে। গৃহকর বাড়ানো হচ্ছে না। শুধু করের আওতা বাড়ানো হচ্ছে। যেমন কোনো ভবনের ওপর নতুন ফ্লোর তৈরি হলে, খালি জায়গায় নতুন ভবন তৈরি হলে সেগুলো করের আওতায় আনা হবে।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ষষ্ঠ পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৮৪ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ৪২৯ ভোট। নির্বাচন ভোট পড়েছে ২২ শতাংশ। ১১ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন রেজাউল করিম। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেন ১৫ ফেব্রুয়ারি।
চসিকের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদ শেষ হলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনা, বর্ষায় চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা, পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন না হওয়ায় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে ৬ মাসের জন্য চসিকের প্রশাসককে হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ২০২০ সালের ৬ আগস্ট চসিক প্রশাসকের চেয়ারে বসেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
এআর/টিসি