চট্টগ্রাম: ক্রেতাদের সরব উপস্থিতি, ঈদের কেনাকাটায় জমজমাট হয়ে উঠেছে নগরের অভিজাত শপিং সেন্টার সানমার ওশান সিটি। সকাল থেকে সেহেরির আগপর্যন্ত সরগরম থাকছে দোকানগুলো।
উৎসবকে ঘিরে পছন্দের পণ্য কিনতে প্রতিদিন এ মার্কেটে ছুটে আসছেন হাজার হাজার ক্রেতা। তাদের বেশিরভাগই কিনছেন ব্র্যান্ডের পণ্য।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সানমার ওশান সিটি থেকে পোশাক কেনা ক্রেতাদের সিংহভাগই রুচিশীল। বেশিরভাগ ক্রেতা দামের চেয়ে পণ্যের মানের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তাদের পছন্দ ও রুচির ওপর গুরুত্ব দিয়েই এখানকার ব্যবসায়ীরা পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সরেজমিন সানমার ওশান সিটিতে দেখা গেছে, ক্রেতা-দর্শনার্থীতে মার্কেটটি ভরপুর। মার্কেটের ভেতরে যেমন ক্রেতাদের ভিড়, তেমনি বাইরেও ক্রেতাদের জটলা চোখে পড়ে। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের হালফ্যাশনের পোশাক, জুতো, গহনা, ব্যাগ, প্রসাধনই বিক্রি হচ্ছে বেশি।
ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে প্রতিটি স্টলের বিক্রয়কর্মীদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে শৈল্পিক, প্লাস পয়েন্ট, ইয়েলো, মুন ওয়াকার, নক্ষত্র ফ্যাশন অ্যান্ড ক্র্যাফটস, ব্লো মুন, ক্যাটস আই, ম্যানহুড, স্মার্ট কালেকশন, জেন্টল পার্কের মতো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানগুলোর শোরুমে।
ক্রেতারা জানিয়েছেন, করোনার কারণে গত দুই বছরের ঈদ সেভাবে উদযাপন করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ফলে এবার সবাই জমজমাটভাবে ঈদ উদযাপন করতে চান। ঈদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে তুলতেই নতুন পোশাক কিনছেন সবাই।
মার্কেটের বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বিক্রি বেশ ভালো। রোজার শুরু থেকেই ক্রেতারা মার্কেটে আসছেন এবং পছন্দের পোশাক কিনছেন। দিন যত যাচ্ছে, ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে। ইফতারের পর থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় থাকে বেশি।
শৈল্পিকের ম্যানেজার সাখাওয়াত হোসেন রনি বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা তেমন হয়নি। এ বছর বেচাকেনা ভালো, ভালো কিছুর আশা করছি। আমাদের শো-রুমে প্রতিদিনই ক্রেতাদের এমন ভিড় থাকে। ক্রেতাদের এ ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইফতারের সময়টুকু ছাড়া বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই।
শৈল্পিকে ১ হাজার ৪৯০ থেকে ৭ হাজার ৯৯০ টাকায় ছেলেদের পাঞ্জাবি, ৪৯০ থেকে ১ হাজার ৪৯০ টাকায় টিশার্ট, ১ হাজার ৮৯০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ টাকায় মেয়েদের থ্রিপিস, ১ হাজার ৪৯০ থেকে ২ হাজার ৭৯০ টাকায় টপস, ৬৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় ফতুয়া, ছোটদের পাঞ্জাবি ১ হাজার ৯০ থেকে ১ হাজার ৯৯০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
দোতলায় আছে নোলক, দুল, রেড আর্থ, লিমা, ওপেলিয়া, গিফট গ্রেস, প্রমি মেটালিক, রেড অ্যাপল, স্বর্ণা, সেতু কালেকশন, ফার্স্টলেডি, ক্যানন, অপেরা, ল্যাক্সাস, কুইনস পার্ক, জেমস গ্যালারি, গিফট গ্রেসসহ বেশকিছু গহনা-প্রসাধন-ব্যাগের দোকান।
তৃতীয় তলায় রয়েছে মেয়ের নানান ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকান। যার মধ্যে সাজ, মক্কা বোরকা হাউস, ফ্যামেলি সপ, ফার্স্ট লেডি, জিনি-নিমি, আর এ বোটিকস, বৈশাখীর মতো খ্যাতনামা দোকান।
চতুর্থ তলায় পাঞ্জাবি বিশাল সমাহার। জ্যান্টাল ম্যান, আর্ট, লুবনান, লেবিস, সারতাস, ওয়েস্টলুক, ফেরারি, আরাস পার্ক, পশ সপ, ক্যান্ডিট।
পঞ্চম তলায় রয়েছে মোবাইল এবং মোবাইল সামগ্রীর দোকান। ঈদ উপলক্ষে সেখানে ক্রেতাতের সরব উপস্থিতি দেখা গেছে।
সানমারে ষষ্ঠতলায় রয়েছে ফুডকোর্ট। সেখানে প্রায় ১৫টি খাবারের দোকান রয়েছে। ইফতারের বিশাল আয়োজন দোকানগুলোতে। ইফতার সেরেই যাতে কেনাকাটা করতে পারেন সে লক্ষ্যেই অনেকেই এ দোকানগুলোতে ইফতার করছেন। কেনাকাটা শেষে আবার গলা ভিজিয়ে নিতে আসছেন অনেকেই।
সপ্তম তলায় বাটা, এপেক্স, ওরিয়নের শোরুম। ওরিয়ন শোরুমের বিক্রয়কর্মী রহিম উল্লাহ মারুফ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে আমাদের শোরুমে নতুন ডিজাইনের জুতো এসেছে। ক্রেতাদের চাহিদাও বেশি। বিক্রিও ভালো।
সানমার ফিনলে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদ ইফতেখার বাংলানিউজকে বলেন, সানমার ওশান সিটিতে প্রায় ৩০০ দোকান রয়েছে। সব দোকানেই নতুন কালেকশন। বেচাকেনাও ভালো। বিনামূল্যে রয়েছে পার্কিং ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২২
বিই/টিসি