ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ভারতের সংসদে নাটকীয় হামলা, উসকে দিল ২২ বছরের পুরোনো স্মৃতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩
ভারতের সংসদে নাটকীয় হামলা, উসকে দিল ২২ বছরের পুরোনো স্মৃতি

কলকাতা: ভারতের সংসদে নাটকীয় হামলায় ধরা পড়ল নিরাপত্তা গাফিলতি, উসকে দিল ২২ বছর পুরনো স্মৃতি। ২০০১ সালে আজকের দিনে অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর ভারতের সংসদ ভবনে সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ৯ জনের।

তার মধ্যে একজন ছিলেন সাধারণ নিরীহ মানুষ, আট জন ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী।

ঠিক ২২ বছর পর বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) অর্থাৎ একই দিনে, ফের আতঙ্ক ছড়াল দেশটির সংসদ ভবনের ভেতরে। হতাহতের খবর না থাকলেও প্রাণ বাঁচানোর আতঙ্কে সংসদে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সাংসদদের মধ্যে। আর এর জেরে ফের বড়সড় নিরাপত্তা গাফিলতি ধরা পড়ল।

জানা যায়, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় কালার স্মোক (রঙিন ধোঁয়া) নিয়ে সংসদে ঢুকে পড়েন দুই অজ্ঞাতপরিচয় যুবক। শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন আচমকা সংসদের ভিজিটর গ্যালারি থেকে সরাসরি ওয়েলে (যেখানে এমপিরা বসেন) লাফ দেন তারা। তানাশাহি নেহি চলেগা (কোনো নাটক চলবে না)- স্লোগান দিতে দিতে এমপিদের উদ্দেশে ছুড়ে মারেন রঙিন ধোঁয়ার গোলা। মুহূর্তেই অধিবেশনে কক্ষের ভেতরটা ছেয়ে যায় হলুদ রঙের ধোঁয়ায়। এর জেরে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় সাংসদদের মধ্যে। অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বাইরে বের হয়ে আসেন সাংসদরা।

তার কিছুক্ষণ পরই নিরাপত্তারক্ষীরা ওই দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেন। পরে সংসদের বাইরে থেকে এক নারী ও আরও এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাদের সবাইকে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা সংসদের কার্যক্রম মুলতবি রাখা হয়। পুরো ঘটনা ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়।

জানা যায়, সাগর শর্মা ও ডি মনোরঞ্জন নামে ওই দুই যুবক ভেতরে থেকে হামলা চালান। বাইরে ছিলেন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা অমল শিন্ডে ও হরিয়ানার বাসিন্দা নীলম কৌর । সাগর শর্মাই ভেতরে যাওয়ার ভিজিটর পাস জোগাড় করেন।

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা এপি অধীর চৌধুরী বলেন, দুই যুবক গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দেন। তারা এমন কিছু একটা ছোড়েন, যা থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। চোখ জ্বালা করছিল। আমাদের দুই সাংসদের হাতে ধরা পড়েন তারা। নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়।  

তার কথায়, এটি অবশ্যই নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়। কারণ, বুধবার আমরা এমপিরা ২০০১ সালে সংসদে প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছিলাম।

বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, বক্তৃতা দেওয়ার সময় পেছন থেকে চিৎকার কানে আসে। পেছন ফিরে দেখি দুজন গ্যালারি থেকে লাফিয়ে পড়ে সামনের দিকে আসছেন। মুখে তাদের ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ স্লোগান। তাদের চেহারা কেমন, দেখতে পাইনি। আসলে ততক্ষণে চারদিকে ধোঁয়া আর ধোঁয়া। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

পুরো ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের এমপি কার্তি চিদাম্বরম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, হঠাৎ করেই ভিজিটর গ্যালারি থেকে দুই যুবক অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়েন। তাদের হাতে টিনের কৌটা ছিল, যার মধ্য থেকে হলুদ ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। তাদের একজন স্পিকারের চেয়ারের দিকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তারা স্লোগান দিচ্ছিলেন। টিনের কৌটা থেকে নির্গত ধোঁয়া বিষাক্ত হলেও হতে পারে।

নাটকীয় এ হামলায় কোনো হতাহতের কোনো ঘটনা না হলেও আরও একবার সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২২
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।