কলকাতা: দুই কন্যা আর বরকে সঙ্গে করে উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে কলকাতা বই মেলায় এসেছেন জয়িতা কয়াল। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন।
প্রশ্ন ছিল, কি কিনলেন কলকাতা বইমেলায়। বরের পছন্দ অনুযায়ী কিনেছেন হুমায়ূন আহমেদ। বড় মেয়ে কিনেছে বাংলায় লেখা-আঁকার একটি বই। ছোট মেয়ে তখনও বই বাছতে ব্যস্ত। গোটা দুয়েক বই নিজে ছোট্ট হাতে বন্দি করে অপর একটি বইয়ে নজর রেখেছে সে।
এতো গেলো পরিবারের সকলের কেনা বইয়ের কথা, আপনার নিজের পছন্দে কোনো বই কেনেন নি? প্রশ্নের উত্তরে লাজুক হাসলেন জয়ীতা কয়াল।
'কিনেছি'। ছোট্ট উত্তর।
'কি বই কিনলেন'? প্রশ্ন শুনে লাজুক হাসিটা প্রসারিত হলো ঠোঁটের কোনা থেকে গোটা মুখে। একবার চোখ তুলে তাকালেন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বরের দিকে।
"বলো উনি জানতে চাইছেন কি বই কিনেছ'? উৎসাহ দেওয়ার ভঙ্গীতে বললেন শ্রী কয়াল। তার মুখে মিটিমিটি হাসি।
"আচ্ছা আপনিই বলুন, রান্নার বই কি বই নয়?" লাজুক হাসিটা সরে গিয়ে একটা দৃপ্ত বিদ্যুৎ খেলে গেল জয়িতা কয়ালের মুখে। সত্যি তো রান্নার বই কি বই নয়? সাহিত্য যদি জীবনের অংশ হতে পারে- তাহলে খাওয়া দাওয়াকে বাদ দিয়ে সাহিত্য কি আদৌ চলতে পারে? তবে কেন রান্নার বইকে সাহিত্য থেকে বাদ দেওয়া হবে? তাতে উচ্চ মার্গের জীবন বোধ বা দর্শন না থাকতে পারে, কিন্তু রান্নার বইয়ে জীবনের এক অমোঘ সত্যি লুকিয়ে আছে সে কথা স্বীকার না করে উপায় নেই।
"আর ভাবতে পারেন শুধু 'ভর্তা' নিয়ে একটা বই। এতো রকমের ভর্তার রেসিপি দেখে না কিনে পারলাম না। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন ছাড়া এই বই আপনি আর কোথাও পাবেন না। " মুখে এবার তৃপ্তির হাসি। সেই হাসিতে যোগ দিলেন জয়িতার স্বামী শ্রী কয়ালও। নিশ্চয় ততক্ষণে তিনি অনুভব করেছেন, এই বইটির পাঠক তার স্ত্রী হলেও লাভ ওঠাবেন তিনিও। তবে শুধু জয়ীতা একা নন, বাংলাদেশের রান্নার বইগুলি নিয়ে আগ্রহ প্রায় সকলেরই।
এছাড়াও অনেকেই খুঁজছেন, বাংলাদেশ ভ্রমণের উপর 'গাইড বুক'। উৎসাহ দেখা যাচ্ছে 'বিজয়'-এর স্টলে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে বই এবং উপন্যাসের চাহিদা প্রতি বছরের মতো এই বছরও তুঙ্গে, প্রবল ভাবে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। অনেকেই বাঙলায় সাইন্স ফিকশন খুঁজছেন। বাঙলায় বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে চাহিদা রয়েছে অনুবাদ সাহিত্যেরও।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬
ভিএস/জেডএম