ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতের বাজার ধরতে বাংলাদেশে শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব জাপানের

নিউজ ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
ভারতের বাজার ধরতে বাংলাদেশে শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব জাপানের মহেশখালীতে নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের নকশা। ছবি: জাইকা

উপমহাদেশ তথা ভারত, নেপাল ও ভুটানের বাজার ধরতে আগ্রহী জাপান। সেজন্য এসব দেশের প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ চেইন গড়ে তুলতে চায় সূর্যোদয়ের দেশটি।

 

এ লক্ষ্যে বাংলাদেশে শিল্পাঞ্চল তৈরিসহ অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল বিনিয়োগের প্রস্তাবও দিয়েছে দেশটি। গত মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার ভারত সফরের পর এই প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত মঙ্গলবারের সেই প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশে একটি শিল্পাঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে জাপান। যেখান থেকে পণ্য যাবে ভারত, নেপাল ও ভুটানে। পণ্য সরবরাহের নিশ্চিতে বাংলাদেশের বন্দর উন্নয়নসহ আঞ্চলিক যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলবে জাপান। ১৩০ কোটি মানুষের আবাসস্থল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বঙ্গোপসাগর এলাকায় উন্নয়নে নজর দেবে জাপান৷

এই শিল্পাঞ্চল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বঙ্গোপসাগর এলাকায় উন্নয়ন জোরদার করবে বলে মনে করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।

রয়টার্স আরও জানায়, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ১২৭ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে জাপান সরকার ।  

জানা গেছে, তিনটি অবকাঠামো প্রকল্পে এই বিনিয়োগ করা হবে, যার মধ্যে আছে মাতারবাড়ী অঞ্চলে নতুন একটি বাণিজ্যিক বন্দর, যার সঙ্গে ত্রিপুরাসহ ভারতের স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চল সংযুক্ত হবে। তবে এই বন্দরের আওতায় শুধু এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বৃহত্তর আন্তর্জাতিক বাজার ধরাও হবে এর লক্ষ্য।

সম্প্রতি ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ, ভারত ও জাপানের মধ্যকার দুদিনের এক বৈঠকের আয়োজন করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স।

ভারতে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোশি সুজুকি এ বৈঠকে অংশ নেন।  

সেখানে তিনি গত মঙ্গলবারের সেই প্রস্তাবনা ফের সামনে আনেন। তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্প ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ের জন্যই লাভজনক হতে পারে। ’

হিরোশি সুজুকি বলেন, ‘গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম সম্ভবত ২০২৭ সালের মধ্যে শুরু হবে। একটি শিল্পাঞ্চল নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যার মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে ভারতের স্থলবেষ্টিত অঞ্চলের সংযোগ স্থাপিত হবে। ’

এ সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলবিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশান রেড্ডি জাপানের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।  

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও জাপানের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং জাপানসহ অন্যান্য দেশের বিনিয়োগ আসার পথ সুগম হবে। ’

ভারতের বাজারকে টার্গেট করে বাংলাদেশে বড় ধরনের জাপানি বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা৷ শুধু তাই নয়, ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায়ও এর বিশেষ গুরুত্ব দেখছেন তারা৷

জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার শহীদ বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি ট্রেড হাব গড়ে তোলার জন্য অনেক আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছে৷ এর আগে যখন প্রধানমন্ত্রী জাপান সফর করেন, তখনও এটা নিয়ে আলোচনা হয়৷ এখন যে প্রস্তাব এসেছে এটা আমাদের অর্থনীতিতে দারুণ প্রভাব ফেলবে৷ ভারতের সেভেন সিস্টার্স-এর সুবিধাটা আমরা অনেক দিন ধরে নিতে পারিনি৷ এটা আমাদের সুযোগ করে দেবে৷ মাতারবাড়ির ডিপ সি পোর্ট একটা বড় হাব হবে৷’

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত জাপান সফর করবেন। সেখানে এ বিষয়ে কথা এগুতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।