ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে জানল আইএমএফ প্রতিনিধিদল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩
অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে জানল আইএমএফ প্রতিনিধিদল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠককে রুটিন বৈঠক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

এই বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জেনেছে।

বৈঠক শেষে বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।  

তিনি বলেন, আইএমএফের প্রতিনিধিদল সব সদস্য দেশেই সফর করে থাকে এবং মুদ্রানীতি, সামষ্টিক অর্থনীতি, তাদের ফিসক্যাল পলিসি নিয়মিত ফলোআপ করে এবং তাদের সদস্য দেশগুলোকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে।  

তিনি আরও বলেন, সদস্য দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে থাকে, বিশেষ করে যখন দ্বিপাক্ষিক ঋণ চুক্তিগুলো হয়, তখন এগুলো কাজে লাগানো হয়।

মো. মেজবাউল হক বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত, মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, ডলারের একক দর- ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল।

তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির লক্ষ্য পূরণে আমরা সবাই মিলে কাজ করি। জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে লক্ষ্য ঠিক করা আছে, মুদ্রানীতি নিয়ে যে লক্ষ্য আমরা ঠিক করে থাকি, তা আমরা যেমন নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করি, আইএমএফও এর যে প্রজেকশনগুলো থাকে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার লক্ষ্য ঠিক করেছি। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমাদের বেশ কিছু আপডেট জানিয়েছি। আমাদের আগামী মুদ্রানীতিতে বেশ কিছু ঘোষণা থাকবে। এগুলো আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনেই। সেই ধারাবাহিকতায় আইএমএফ এসেছে। আগামী মুদ্রানীতিতে যেসব সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হবে, সেগুলো নিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

মো. মেজবাউল হক বলেন, আমরা ডলারের একটি সিঙ্গেল একটি রেটের দিকে যাচ্ছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যে ডলার বিক্রি করছি, তা ১০৩ টাকা। সুতরাং সিঙ্গেল রেটের দিকে আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। এখন যে পার্থক্য আছে, তা আমরা বাজারভিত্তিক করার চেষ্টা করছি। আইএমএফের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আগামী জুলাই থেকে রিজার্ভ তথ্য প্রকাশ করা হবে।

জুন নাগাদ প্রাক্কলিত রিজার্ভ ধরে রাখা যাবে কি না- এমন অনিশ্চয়তা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো ৩১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। জুনের মধ্যে আকুর একটি বড় পেমেন্ট আছে। এ ছাড়া আর কোনো বড় পেমেন্টে নেই। এর মধ্যে ডলারের যেমন ইন ফ্লো আছে, আবার আউট ফ্লোও আছে। আশা করছি কাছাকাছি থাকব।

আমদানি নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মেজবাউল হক।  

তিনি বলেন, সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো আগামী বাজেটে ও মুদ্রানীতিতে থাকবে। অন্যান্য উদ্যোগের মধ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশাধনের বিষয়টিও আছে। এসব বিষয় নিয়েও কথা বলেছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল।

এদিকে ঈদের আগে আসা প্রবাসী আয়কে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এপ্রিলের ২১ দিনে ১২৭ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এটা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ স্থানীয় বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে বলে জানান মেজবাউল হক।

বাংলাদেশের রিজার্ভ ভিন্ন পাঁচটি মুদ্রায় সংরক্ষণ করা হয় উল্লেখ করে মুখপাত্র বলেন, যখন যে মুদ্রা নিরাপদ হয়, তখন সেই মুদ্রায় রিজার্ভ রাখা হয়। রিজার্ভ সম্পর্কিত কমিটি সেই সিদ্ধান্ত নেয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩

জেডএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।