ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৫ বছরে সম্পদ ও ভোগের বৈষম্য বেড়েছে: দেবপ্রিয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
১৫ বছরে সম্পদ ও ভোগের বৈষম্য বেড়েছে: দেবপ্রিয়

ঢাকা: সিপিডির বিশেষ ফেলো ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, গত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যানে স্পষ্ট বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু একই সাথে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈষম্য শুধু সম্পদ কিংবা অর্থের নয়, এখানে ভোগ বৈষম্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ভোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হতে পারেনি।

বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা: শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক সুরক্ষা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা এগিয়েছি সন্দেহ নেই। যে মানুষগুলো বিপন্ন অবস্থায় আছে, তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছাতে পারিনি। উন্নয়নের মধ্যে ন্যায্যতা আনতে হবে। পিছিয়ে পড়া মানুষের হিস্যাকে সামনে আনতে হবে। উন্নয়নের ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনাই হলো আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ। গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতাই পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে জায়গা দেয়। সবচেয়ে বড় ক্রিয়া ক্ষেত্র হলো নির্বাচন। নির্বাচনের অঙ্গীকারগুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে। পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর উন্নয়নকে বার বার উপস্থাপন করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গেছে। মধ্যবিত্ত সমাজ ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য রয়েছে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক মান ও রাজনৈতিক মূল্যবোধের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্তের বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিককালে ওই ভূমিকা ম্রিয়মাণ হয়ে গেছে, যার কারণে আমরা পিছিয়ে গেছি।

পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের প্রাক-নির্বাচনের সময় পরিস্থিতির কারণে উৎসাহবোধ করিনি। কিন্তু এবারে নির্বাচনের প্রাক্কালে গত দেড় দশকের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা আমরা মূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছি। এটা করতে গিয়ে আমাদের মনে হয়েছে, জাতীয় উন্নয়নের যে আখ্যান শুনি, সেটা কতখানি সত্যি ও মজবুত সেটা বোঝা প্রয়োজন; যোগ করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডেন্টে যে সুবিধা ভোগ করছি, তা আস্তে আস্তে সংকীর্ণ হয়ে আসছে। যত সময় যাচ্ছে, সুবিধা ক্রমান্বয়ে হাতছাড়া হচ্ছে। এখনো সময় আছে যদি মানসম্মত শিক্ষা  নিশ্চিত করতে পারি তাহলে সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আছে, সেখানে আমাদের শিশুদের কাজে লাগাতে পারব।

মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা বিষয়ে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে উন্নতি হলেও শিক্ষার মান রক্ষা ও ঝরে পড়া রোধ করা যায়নি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশু, শহরের নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশু, ছিন্নমূল শিশু, উপকূলীয় শিশু এবং করোনাকালীন যে সব শিশুরা ঝরে পড়েছিল, এসব শিশুরা পিছিয়ে আছে। উন্নয়নের ছাঁকুনি নিয়ে  ছেঁকে যাদের মূল ধারাতে আনার লক্ষ্য ছিল, তা থেকে তারা বের হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।