ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বদলে যাওয়া বাংলাদেশ: মাথাপিছু আয় ৯১ থেকে ২৭৬৫ ডলার

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩
বদলে যাওয়া বাংলাদেশ: মাথাপিছু আয় ৯১ থেকে ২৭৬৫ ডলার

ঢাকা: ১৯৭২ সালে ৯১ ডলার মাথাপিছু আয় নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে দেশের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ৭৬৫ ডলার।

৭২ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ গুণ বেশি।

এই উন্নয়নযাত্রায় দেশের মাথাপিছু আয় কখনো বেড়েছে কখনো কমেছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে।

সরকারি তথ্যে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয় বাড়ে প্রায় ২০৪ শতাংশ। ১৯৭২ সালে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ মার্কিন ডলার। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এ আয় ৩ গুণেরও বেশি বেড়ে হয় দাঁড়ায় ২৭৭ ডলার।  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৭৬ সালে দেশের মাথাপিছু আয় কমে দাঁড়ায় ১৩২ ডলারে। ক্রমবর্ধমান উন্নতির ধারা থেকে এক লাফে মাথাপিছু আয় কমে প্রায় ৫২ শতাংশ। এর পরের বছর ১৯৭৭ সালে মাথাপিছু আয় আরও কমে ১২৩ ডলারের নামে।

১৯৭৫ সাল পরবর্তী সময়ে অবৈধ সামরিক শাসন আর রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে পরবর্তী বছরগুলোয় মাথাপিছু আয় বাড়ার ধারা থমকে যায়।  

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া মাথাপিছু আয় অর্থাৎ ২৭৭ মার্কিন ডলারে পৌঁছাতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। ১৯৯০ সালে দেশের মাথাপিছু আয় হয় ২৯৪ মার্কিন ডলার। ১৯৯১ সালে দেশের মাথাপিছু আয় আবার কমে দাঁড়ায় ২৮৩ ডলারে।

১৯৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়ে মাত্র ৬ মার্কিন ডলার। এ সময়টার প্রায় সবটা সময় ক্ষমতায় ছিলেন সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

১৯৯১ সালের পর থেকে অল্প অল্প করে বাড়তে থাকে দেশের মাথাপিছু আয়। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ে ১২৭ ডলার। ২০০১ সালে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৪১০ ডলার। পরবর্তীতে ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত মাথাপিছু আয় বাড়ে মাত্র ৯৩ মার্কিন ডলার।

২০০৯ আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতা নেয় তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৬৮৬ মার্কিন ডলার। পরের বছরগুলোয় ধারাবাহিকভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে দেশের মাথাপিছু আয়। সবচেয়ে বেশি বাড়ে ২০১৬ সালে ৪২৪ মার্কিন ডলার। এ সময় দেশের মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৬৬০ মার্কিন ডলার।

বিগত বছরগুলোয় ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা দেশের মাথাপিছু আয় ২০২৩ সালে এসে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৭৬৫ মার্কিন ডলার। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাথাপিছু আয় বেড়েছে দুই হাজার ৭৯ মার্কিন ডলার, যা ২০০৯ সালের চেয়ে প্রায় চার গুণ এবং ১৯৭২ সালের চেয়ে ৩০ দশমিক ৩৮ গুণ বেশি।

বঙ্গবন্ধুর সময়ে দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ার প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন এবং এভাবে অল্প সময়ের মধ্যে অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যান, যা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুবই ব্যতিক্রমী।

বিগত বছরগুলোয় আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মাথাপিছু আয় বাড়ার মূল কারণ প্রবাসী বাংলাদেশি ও তৈরি পোশাক খাতসহ বিভিন্ন খাতে দেশের মেহনতি মানুষ। দেশের কৃষকরা এখন আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তাদের কৃষিকাজ পরিচালনা করছেন, ফলে ফসলের ফলন বেশি হচ্ছে ও মজুরি বাড়ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, লাখ লাখ পুরুষ ও নারী শ্রমিক বছরের পর বছর ধরে তৈরি পোশাক ও অন্যান্য শিল্প খাতে কাজ করার মাধ্যমে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ার এটাও অন্যতম প্রধান কারণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে এমএ মান্নান বলেন, এই নেতৃত্বের কারণেই আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের এই দেড় দশকে টানা তিন মেয়াদে দেশের প্রধান সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো ভালো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩
এমইউএম/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।