ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নানা চ্যালেঞ্জে বছর শেষ, সংকট কাটেনি ব্যবসায়ীদের

গৌতম ঘোষ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
নানা চ্যালেঞ্জে বছর শেষ, সংকট কাটেনি ব্যবসায়ীদের

ঢাকা: বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, ডলার সংকট ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে বছর শেষ করেছে দেশের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। ফলে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের আমদানি কমায় শিল্পের উৎপাদন ও রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।

এ অবস্থায় নতুন বিনিয়োগ দূরের কথা, বিদ্যমান বিনিয়োগ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।

তারা বলেছেন, নতুন বিনিয়োগ করে প্রত্যাশিত আয় করতে পারছেন না। উল্টো উচ্চসুদে ঋণ পরিশোধের চাপসহ আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দর বাড়ার প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পের উৎপাদন এখন পুরোটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। মূল্যস্ফীতির চাপে কমেছে পণ্যের চাহিদা। কমেছে বেচাকেনা, ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়েছে ভাটা। এই সংকটে চাপে আছেন ব্যবসায়ীরা।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ডলার সংকট ও ডলারের চড়া দামের চাপে আছেন ব্যবসায়ীরা। ডলার সংকট মোকাবিলায় গত বছরের এপ্রিল থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। জুনে নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করা হয়। এখন পর্যন্ত রপ্তানিকারক ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের এলসি খোলা যাচ্ছে। অন্যান্য পণ্যে অনুমতি সাপেক্ষে এলসি খোলা যাচ্ছে।

আবার রিজার্ভ ঠিক রাখতে সরকারের নেওয়া কঠোর নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রায় সব খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এতে এক রকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। এরমধ্যে আমদানি নির্ভর শিল্প অন্যতম। শিল্পে কাঁচামাল সংকটে পণ্যের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এসব শিল্পে বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক শিল্প কাঁচামাল সংকটে বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এগুলোয় কর্মরত শ্রমিকরাও চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। নতুন বিনিয়োগে গড়া শিল্পে কোনো গতিই আসেনি। ফলে নতুন করে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে না।

জানা গেছে, বৈশ্বিক মন্দা ও ডলার সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন। এতে নতুন শিল্প স্থাপনেও মন্দা দেখা দিয়েছে। বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে গেছে। চলতি অর্থ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে এ খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে মাত্র সোয়া এক শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। আবার ঋণ পরিশোধে ব্যয়ের চাপে আছেন ব্যবসায়ীরা। আগে থেকে নেওয়া ঋণের বিনিয়োগ থেকে আয় বাড়াতে পারছেন না তারা। উল্টো এসব ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১১ দশমিক ৪৭ শতাংশ হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতার কারণে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ বাড়াতে পারছে না। এতে ব্যাংকগুলোয়ও নগদ টাকার সংকট বাড়ছে।

এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছে ছোট ও মাঝারি শিল্প। এসব শিল্প উদ্যোক্তারা নিজেরা কাঁচামাল আমদানি করতে পারে না। তারা অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে উৎপাদন করছে। আর তাদের চাহিদার জোগান দেন বাণিজ্যিক আমদানিকারকরা। তারা এখন শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করে সরবরাহ করতে পারছেন না। এতে বড় সংকটে পড়েছে এ খাতটি।

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহ-সভাপতি ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ২০২৩ সালটি একটি ঘটনাবহুল বছর পার করেছি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বছরটি নানা যুদ্ধসহ অস্বস্তির মধ্যে ছিল। এরফলে শিল্পে কাঁচামাল সংকটে পণ্যের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে শিল্পে বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে সরকারের বাস্তবিক কোনো সহায়তা নেই। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য এখন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চেষ্টা করে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কাঁচামাল আমদানিতে আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সহসা কোনো উপায় দেখছি না।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। ডলারের সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপর আমাদের রিজার্ভ কমেছে। ফলে সরকার অনেক সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছে। আমরা আশা করছি আগামী বছর নির্বাচনের পর যদি রাজনৈতিক পরিস্থিতি সুন্দর থাকে তাহলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।

টগি ফান ওয়ার্ডের ইনচার্জ মাসুদুর রহমান মান্না বাংলানিউজকে বলেন, গেল বছর আমাদের রিজার্ভ,  ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতিসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। যার প্রভাব সারা দেশে পড়েছে। বর্তমানে সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মিটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরমধ্যে বিনোদন বিষয়টি একেবারেই বাইরে থেকে যাচ্ছে। এর একটা প্রভাব আমাদের বাণিজ্যখাতেও পড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের রেভেনিউ অনেক কমেছে। এছাড়া আমারও বৈশ্বিক মন্দায় নতুন নতুন পণ্য বা সেবা সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারি নাই। কারণ এসব সেবা আমদানি নির্ভর। আর ডলার সংকটে সেটা আমদানি করতে পারছি না। সব মিলিয়ে ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো না। নতুন বছরে যদি এই নানা মুখি চ্যালেঞ্জ কমে যায় তাহলে আশা করছি, আমরা আবার পুরনো অবস্থায় ফিরে যেতে পারব।

সিরাজ জুয়েলার্সের মালিক ও বাজুসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহিন বাংলানিউজকে বলেন, ডলারের দাম বেড়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি, ভূরাজনীতির নানা কারণে চলতি বছর অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে পার করছি। এতে আমাদের লাভের পরিমাণও কমেছে। নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য বর্তমানে স্বর্ণ ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের বেচাকেনা কমে গেছে। নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা থাকবে যুদ্ধ বিগ্রহ যদি থেমে যায় তাহলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, গেল ২০২৩ সাল জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে গেছে। এ সময় আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। যেমন, ডলার, গ্যাস, বিদ্যুৎ, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধিসহ ছিল রিজার্ভ সংকট। গত দুই তিন মাসে রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। ব্যবসায়ে এসব থাকাটা স্বাভাবিক হলেও এতে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ এসবের মধ্যে দিয়েই আমাদের ব্যবসা চালিয়ে নিতে হবে। নতুন বছরে নতুন সরকার ডলার সংকটসহ দেশে একটি ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করবে বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পার করছি। অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা সমস্যা রয়েছে। নিজেদের মতো করে এ সব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছি। গত কয়েক বছর অনেক উত্থান পতন গেছে। কোভিড, যুদ্ধ, ডলার, রিজার্ভ সংকট, শিল্পের উৎপাদন কমে যাওয়া, রপ্তানিতে প্রভাব। এছাড়া ভূরাজনীতি, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকের সুদের হার বৃদ্ধিসহ নানা সংকট এখনও রয়ে গেছে। সারা বিশ্বেই এখন সংকট চলছে।

তিনি বলেন, ডলার সংকটে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন সক্ষমতা অনেক কমিয়ে কারখানা কেবল চালু রাখা হচ্ছে। এতে ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাওয়ার পাশাপাশি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। সব কিছু মিলিয়ে আমরা এখন টিকে থাকার লড়াই করে যাচ্ছি। আগামী বছরও যেহেতু আমাদের অনেক সংকট রয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের লড়াইটা যাতে চালিয়ে যেতে পারি সেই প্রত্যাশাই করছি।

সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটারি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা বাংলানিউজকে বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় বেঁচে থাকার লড়াই করে যাচ্ছি। বর্তমানে ডলারের উচ্চ মূল্য, যুদ্ধ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাসহ নানা সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের আয় কমেছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ এলসি খুলতে পারিনি। ফলে আমদানি কম হয়েছে, কর্মসংস্থান কমেছে, রপ্তানিও কমেছে। সামনের দিনে আমরা পরিস্থিতির উত্তরণের কোনো লক্ষণ দেখছি না। ফলে নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করছে না। তাই বলা যায়, ডলার সংকট ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে বেঁচে থাকার লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে।

এ বিষয়ে বসুন্ধরা সিমেন্টের চিফ মার্কেটিং অফিসার খন্দকার কিংশুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান বাজারে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। কারণ, ডলারের উচ্চমূল্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বড় বড় প্রকল্পগুলোর কাজ বন্ধ, অর্থনৈতিক মন্দার জন্য ব্যক্তিগত কাজও এখন কেউ করছে না। ফলে বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে লোকসানে পড়তে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যেহেতু কাঁচামাল আমদানি করে আনতে হয়৷ সেখানে সরকারের বিভিন্ন ট্যারিফ সংক্রান্ত ইস্যু রয়েছে। যেটা সিমেন্ট শিল্পের জন্য সহায়ক নয়। এছাড়া ডলার রেটের জন্য এলসি রেট অনেক বেশি। এখন নির্বাচনের পরে যে নতুন সরকার আসবে তারা যদি নতুন করে প্রকল্প নেয়, ডলার সংকট, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা কমে যায়, তাহলে আমরা আবার ধীরে ধীরে এই খাতের মন্দা কাটিয়ে উঠতে পারব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে ডলারের দাম ছিল গড়ে ৮৬ টাকা। আর এখন ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১ টাকা। এই সময়ে ডলারের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা। চলতি বছরের শুরুতে ডলারের গড় দাম ছিল ১০০ টাকা। এ বছর এখন পর্যন্ত বেড়েছে ১১ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের এই দামে ডলার পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এখনও আমদানি করতে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রতি ডলারের বিপরীতে ১২৩ টাকা ব্যয় হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি দাম দিতে হচ্ছে। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে মূল্যস্ফীতির হার। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্যের দাম বেশি বাড়ায় মূল্যস্ফীতির হার ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

এরফলে, গত অর্থবছরে শিল্প খাতের পণ্য ও কাঁচামালের আমদানি ও এলসি খোলা দুটিই কমেছিল। চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে মোট আমদানি কমেছে ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। শিল্প খাতের মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে ৯ শতাংশ। একই সময়ে মোট আমদানি ব্যয় কমেছে ১৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি। আর এই আমদানি ব্যয় কমানোয় সংকুচিত হয়েছে শিল্প খাতের প্রসার।

এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে এই খাতের ব্যাক টু ব্যাক এলসি কমেছে সাড়ে ১০ শতাংশ, আমদানি কমেছে ২৯ শতাংশ। এর প্রভাবে রপ্তানি পণ্যের উৎপাদন কম হবে। ফলে রপ্তানি কমবে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় এসেছে ৯৯০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় এসেছিল এক হাজার ২৩২ কোটি ডলার। ফলে রপ্তানি কমেছে ২৪২ কোটি ডলার।

একইসঙ্গে শিল্পের অন্যতম উপকরণ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতেও আমদানি কমেছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। একইসঙ্গে গ্যাসের আমদানিও কম। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে জ্বালানি পণ্যের এলসি কমেছে সাড়ে ১২ শতাংশ, আমদানি কমেছে ২০ শতাংশ।

এছাড়া গত অর্থবছর থেকেই শিল্পের যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। এতে নতুন বিনিয়োগ করেও কারখানা চালু করতে পারেনি অনেকেই। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসেও শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি এলসি কমেছে ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আমদানি কমেছে ৩৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। এতেও নতুন শিল্প স্থাপনে নেতিবাচক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতির এলসি ৫১ শতাংশ এবং আমদানি ৬৪ শতাংশ কমেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে শিল্পের মৌলিক কাঁচামালের মধ্যে বস্ত্র খাতের খাতের কাঁচামাল টেক্সটাইল ফ্যাব্রিকস আমদানির এলসি কমেছে ২০ দশমিক ২১ শতাংশ ও আমদানি কমেছে ২৮ দশমিক ০৯ শতাংশ।  

দেশে রাসায়নিক পণ্যের অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এগুলো থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদার একটি অংশ মেটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করে। এই খাতের কাঁচামালের এলসি কমেছে ৪৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। আমদানি কমেছে সাড়ে ৫২ শতাংশ।

নির্মাণ খাতের সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল ক্লিংকার ও পাথর আমদানির এলসি কমেছে ৪৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আমদানি কমেছে ৪১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
জিসিজি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।