ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ২০.৫ বিলিয়ন ডলার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ২০.৫ বিলিয়ন ডলার

ঢাকা: এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুই মাসের আমদানি বিল বাবদ ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। এরপর মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ালো ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে।

আর নিট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে (বিপিএম৬)।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।

বাংলাদেশ সবশেষ গত সোমবার নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুই মাসের আমদানি ১২৭ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে।

করোনা মহামারিকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হলে আমদানি ব্যাহত হয়। অন্যদিকে প্রবাসীরা সঞ্চয়কৃত অর্থসহ দেশে ফিরতে শুরু করেন। করোনাকালীন যারা বিদেশে থাকেন তারাও দেশে অর্থ পাঠানোর হার বাড়িয়ে দেন। ফলে দেশে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ মজুদে পরিণত হয় বৈদেশিক মুদ্রা। এ  সময় বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনার ফলে রিজার্ভের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈদেশিক মুদ্রার উল্টো পরিস্থিতি হয়। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়। যুদ্ধের আগে যে পণ্য আমদানি করা হতো, একই পণ্য যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বেড়ে যায়। কমতে থাকে প্রবাসী আয়। ডলারের বিনিময় হার অস্থির হয়ে ওঠে। ফলে রিজার্ভ বিক্রি করে ডলার সংকট সামাল দেওয়া শুরু হয়। এ সময় ডলার এক ঝুঁকি মধ্যে পড়ে যায়।

উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বেশ কিছু বিষয়ে নির্দিষ্ট শর্ত দিয়ে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশ এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পায় এবং ডিসেম্বরে পায় দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার।

ঋণ দেওয়ার সময় আর্থিক খাতে নানা সংস্কারের পাশাপাশি বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দেয় আইএমএফ। শর্ত অনুযায়ী গত জুন শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। কিন্তু ওই সময় তা ছিল ২ হাজার ৪৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আইএমএফকে জানানো হয়, সংসদ নির্বাচনের পর রিজার্ভ ও রাজস্ব আয় অর্জনের শর্ত পূরণ সম্ভব হবে। এর আইএমএফ রিজার্ভ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল করে।

আইএমএফের নতুন শর্ত অনুযায়ী, বিদায়ী মাস ডিসেম্বরে প্রকৃত রিজার্ভ রাখার কথা এক হাজার ৭৭৮ কোটি ডলার। আগামী মার্চ মাসে তা এক হাজার ৯২৬ কোটি ডলার ও জুনে দুই হাজার ১০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণ এখনো দেশের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকের তথ্য অনুযায়ী আকুর বিল ১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ালো ২০ দশমিক ৫ বিনিয়ন ডলারে (বিপিএম৬)।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, জানুযারি ০৯, ২০২৪
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।