ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শ্রমিকদের বাজেট যেন সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে না হয়: শাজাহান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৪
শ্রমিকদের বাজেট যেন সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে না হয়: শাজাহান কথা বলছেন শাজাহান খান, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দেশের শ্রমজীবী মানুষের জন্য আলাদা করে শ্রমিক বাজেট তৈরি করার পরামর্শ দিয়ে পরিবহন নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, শ্রমিকদের বাজেট যেন একটা সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে না হয়।  

শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আসন্ন ‘জাতীয় বাজেট-২০২৪-২৫ উপলক্ষে শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওই নেতা এ কথা বলেন।

এই গোলটেবিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

পরিবহন নেতা বলেন, শ্রমিকদের বাজেট যেন একটা সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনে না হয়। এছাড়া তাদের কাজগুলোকে সমন্বয় করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্মের কথা যে মালিক ও শ্রমিকরা বলছিলেন তা বাস্তবায়নের সময় এখন এসেছে। শ্রমিকদের জন্য যে মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করে তারা যদি এই একটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আলাপ বা সমন্বয় করে কাজ করবে।

ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে কথা বলার কারণে অনেকের আক্রোশে পড়তে হয়েছে জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, ২০১৩ সালে যখন ব্যাপক আকারে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে জ্বালাপোড়া হচ্ছিল তখন প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন তা নিয়ন্ত্রণ করতে শ্রমিক এবং মালিকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। তখন মালিকদের সমস্যা ছিল, তারা বলছিলেন ট্রেড ইউনিয়নের কারণে সমস্যা হচ্ছে। ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা গিয়ে নাকি গার্মেন্টস বন্ধ করাসহ আরও অনেক কিছু করেন। আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়েছিল মালিকরা তাদের জুট ব্যবসাসহ শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে কিছু গুন্ডাবাহিনী পালতেন। আর এগুলো বন্ধ করে শ্রমিক এবং মালিকদের মধ্যে যদি একটা সুসম্পর্ক করা যেত। তবে প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন যারা করেন তারা কখনোই শিল্পের ক্ষতি চান না।

শ্রমিক ও মালিক দুই স্বত্তা রক্ষা করে চলতে পারলে শিল্পের সম্ভাবনা বাড়বে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, শুধু গার্মেন্টস শিল্প নয়, প্রতিটি শিল্পই মালিক এবং শ্রমিক এই দুই সত্তাকে রক্ষা করে চলতে হবে। গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন যে অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে যে শিল্পের মালিক শিল্প পরিচালনা করতে স্বচ্ছতা রক্ষা করেন না, ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে সেই টাকা অন্য জায়গায় খাটায়। পাশাপাশি শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য যেমন বিভিন্ন সভা, সেমিনার হয় কিন্তু মালিকদের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। যেহেতু সব মালিক এক নয়, তাই মালিকদের সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন আছে। মালিকদের সচেতন করার মাধ্যমে বর্তমানে যে সমস্যা হচ্ছে, এগুলোই পরবর্তীতে না হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আলোচনায় আলোচকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, আসছে বাজেটে শ্রমিকদের জন্য আলাদা করে শ্রমিক বাজেটখাত তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে যে প্রস্তাবগুলো করেছে তা যেন এবারের বাজেটে বাস্তবায়ন করা হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দ যেন না কমানো হয়।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আজকে শ্রমিকদের যে দাবি তা মালিকপক্ষ সরকারসহ সবাই একমত। এখন আমরা চাইব সংসদে এ দাবি যেন বাস্তবায়ন করা হয়। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যে আটটি দাবি তোলা হয়েছে সেগুলো যদি বাস্তবায়ন না হলেও যেন গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো বাস্তবায়িত হয়। গার্মেন্টস মালিক যারা সংসদ সদস্য আমি তাদের সবাইকে বলব, সংসদে যেন শ্রমিকদের এই দাবিগুলো নিয়ে কথা বলেন।

সভাটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নাসির উদ্দিন, সিপিডি গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম, বিলস নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৪
ইএসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।