ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিল এডিবি, থাকবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিল এডিবি, থাকবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি

চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরে বাংলাদেশে ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকবে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক সেপ্টেম্বর সংস্করণে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

এডিবি এর আগে এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের জন্য ৬ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। সংশোধিত পূর্বাভাসে তা ১ শতাংশ কমিয়ে ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামালো।   প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও অস্বাভাবিকভাবে বাড়বে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

দেশে এখন মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপর। এডিবি গত এপ্রিলে চলতি অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসার  পূর্বাভাস দিয়েছিল। কিন্তু এখন বলছে,  মূল্যস্ফীতি না কমে বরং তা ১০ শতাংশে উন্নীত হবে।

গত জুলাই ও আগস্ট মাসে প্রথমে কোটা বিরোধী ও পরে সরকার হটানোর আন্দোলনের কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। দেশের পূর্বাঞ্চলের বন্যা অর্থনীতির আরও ক্ষতি করে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে এডিবি। এ দুই প্রভাবে প্রবৃদ্ধির গতি কমবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

এডিবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতি ও অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে চাহিদা কমবে। পণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া এবং টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি। তবে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে বলেও জানিয়েছে এডিবি। সংস্থাটির পূর্বাভাস, মূল্যস্ফীতির হার আবার দুই অঙ্কের ঘরে উঠতে পারে।

ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক হিসাবের ওপর চাপ, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি বিনিয়োগের ধীরগতির কারণে গত দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশের নিচে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যা ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।

এডিবির ধারণা, রাজস্ব ও আর্থিক নীতিতে কঠোরতা আছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ক্রয় ও বিনিয়োগ আরও কমবে। নেতিবাচক ঝুঁকি থাকায় সামষ্টিক অর্থনীতির পূর্বাভাস অত্যন্ত অনিশ্চিত। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের দুর্বলতাই এসব ঝুঁকির উৎস।

গত দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। সাধারণ সীমিত আয়ের মানুষকে চড়া দামে বাজার থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে, যা তাদের কষ্ট বাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর ছাড়িয়ে যায়।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তবু এখনো মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে আছে। যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশের মতো। মূল্যস্ফীতির এই আঘাত পুরো বছর জুড়ে অর্থনীতিকে সহ্য করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৯ ঘণ্টা,সেপ্টেম্বর ২৫,২০২৪
জেডএ/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।