ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৈরী আবহাওয়ায় নওগাঁয় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

তৌহিদ ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
বৈরী আবহাওয়ায় নওগাঁয় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা

নওগাঁ: নওগাঁয় বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান ও শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফলে তৈরি হয়েছে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা।

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার ফলে জমিতেই নুইয়ে পড়েছে ধানগাছ। বৃষ্টির পানিতে ডুবছে ধানে ছড়া। আর শীতকালীন সবজিও নষ্ট হতে শুরু করেছে।

ফসলের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর এলাকার কৃষক আমজাদ আলীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, সপ্তাহ তিনেক পরই ধান কাটবেন বলে মনস্থির করে রেখেছিলেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় সেই ইচ্ছেতে ছন্দপতন হয়েছে।  

কৃষক আমজাদ জানান, চলতি বছর আড়াই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন তিনি। এর মধ্যে প্রায় দুই বিঘা জমিরই ধানগাছ পড়ে গেছে পানিতে। এসব গাছ আর নিজে থেকে দাঁড়াতে পারবে না। ফলে পানিতে পচে নষ্ট হয়ে যাবে।

একই অবস্থা নওগাঁর ১১ উপজেলার ফসলের মাঠগুলোতে। অধিকাংশ জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। যদিও এখন আর বৃষ্টি নেই, আবহাওয়াও অনুকূলে, তারপরও চাষিরা বলছেন, যেসব ধানগাছ একবার পড়ে গেছে, সেসব একেবারে শেষ। পানিতে পচে নষ্ট হয়ে যাবে।

অনেক চাষি আবার ক্ষতি কিছুটা কমাতে তাদের জমির পড়ে যাওয়া ধান গাছগুলো আঁটি করে বেঁধে দিচ্ছেন।

ধানের পাশাপাশি ক্ষতি হয়েছে সবজি ক্ষেতেরও। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে মরে যাচ্ছে সবজির চারা। বিশেষ করে শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, মুলা, লাল শাক ও পালং শাকসহ শীতকালীন যেসব সবজি রয়েছে, সবকিছুর ক্ষতি হয়েছে।  

চাষিরা বলছেন, সামনের দিনে যদি আবহাওয়া ভালো না হয়, তাহলে বাকি গাছগুলো বাঁচানো যাবে না। এরইমধ্যে বৃষ্টির কারণে পাতা ও কাণ্ডপচা রোগে আক্রান্ত হয়ে সবজি চারা মরে যাচ্ছে।  

তবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফসলের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টিতে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না ধানের। কারণ ধানের জন্য বৃষ্টি কিছুটা উপকার করে। তবে যদি বাতাসের কারণে গাছ পড়ে যায়, তাহলে ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।  

তিনি বলেন, আমাদের জেলায় গত কয়েকদিনে মাত্র ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেক্ষেত্রে ফসলের ক্ষতি হওয়ার তেমন কোনো শঙ্কা নেই।

খলিলুর রহমান বলেন, ধানের ক্ষেত্রে আমরা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। যাদের ধান গাছ পড়ে গেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো আঁটি করে বেঁধে দিতে হবে, যাতে করে মাটিতে পড়ে না থাকে এবং পানির সংস্পর্শে না থাকে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে ফসলের ক্ষতি হবে না।

তিনি বলেন, সবজির জন্য আমরা কৃষকদের জানাচ্ছি, সবজি ক্ষেতে পানি জমে থাকলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন করতে হবে এবং কাণ্ডপচা রোগের জন্য আমরা বেশ কয়েকটি ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।

চলতি মৌসুমে নওগাঁয় রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে এক লাখ ৯৬ হাজার হেক্টর জমিতে। আর তিন হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে শীতকালীন সবজি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।