ঢাকা: ডাল ও ভোজ্যতেলে আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে নতুন একটি প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এ প্রকল্পে ভালো মানের ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি ভোক্তা ও কৃষকদের কাছে ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
প্রকল্পটি দেশের আমদানি নির্ভরতা কমানোর মাধ্যমে কৃষি খাতের উন্নয়ন সাধন করতে সহায়তা করবে এবং দেশের পুষ্টি নিরাপত্তা ও কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনের ‘ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) আগামী পাঁচ বছর (নভেম্বর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৯) মেয়াদে প্রায় ২৬৫.৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো দেশের ক্রমবর্ধমান বীজের চাহিদা পূরণ এবং ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রটি সুষম ও টেকসই করে তোলা। প্রকল্পটির মাধ্যমে ১৮,০০০ মেট্রিক টন গুণগত মানসম্পন্ন ডাল ও তেলবীজ উৎপাদন এবং কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এ ছাড়াও, ২০০০ জন চুক্তিবদ্ধ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তারা ডাল ও তেলবীজের প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। এর পাশাপাশি, ৬০০ মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড ট্রানজিট বীজ গুদাম নির্মাণ করা হবে এবং উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় খামারের কার্যক্রমকে সহজতর করা হবে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান মো. ফেরদৌস রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, কৃষকদের ডাল ও তেলবীজের প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণের কলা-কৌশল ও কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৃদ্ধি করা। কৃষকদের কাজ থেকে উৎপাদিত ভালো জাতের ডাল ও তেলবীজ সংগ্রহ করে আরও বেশি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের ডাল ও তেল বেশির ভাগই আমদানি করে আনতে হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং ন্যায্যমূল্যে বীজ সরবরাহ করা হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্ল্যানিং অনুষদ) মো. মাহাবুবুল হক পাটোওয়ারী বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডাল ও তেলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষককে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হবে। বীজ উৎপাদন করে সেটা ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হবে। এতে করে আমদানির ওপর চাপ কমবে এবং স্বল্পমূল্যে কৃষকদের ভালো বীজ সরবরাহ করা যাবে। বাংলাদেশের যেসব জেলাতে ভালো ডাল ও তেলবীজ উৎপাদন হয়, সেখানে ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে আমদানি করে ডাল ও তেলবীজ সরবরাহ করা হয়। তাই আমাদের লক্ষ্য হলো, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনা। তার সঙ্গে স্বল্পমূল্যে কৃষকের কাছে উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করা। এতে করে কৃষকরা যেমন উপকৃত হবে পাশাপাশি আমাদের দেশের উৎপাদনও অনেক বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২৪
এসএমএকে/এমজেএফ