ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ মানছে না সিটি ব্যাংক

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ মানছে না সিটি ব্যাংক

ঢাকা: সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবার থেকে দুইজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবেন না। কিন্তু দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে একই পরিবারের রয়েছেন পাঁচজন পরিচালক।



বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর সিটি ব্যাংককে সাতদিনের মধ্যে একই পরিবারের পরিচালকের সংখ্যা দুইজনে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
 
অথচ এক বছর পার হয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করেনি ব্যাংকটি। উল্টো গেলো এক বছর আগে (২০১৪ সালের অক্টোবরে) উচ্চ আদালতে রিট করে বিষয়টি স্থগিত করে রেখেছেন ব্যাংকের পরিচালক দীন মোহাম্মদ।
 
এ বিষয়ে দ্য সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান রুবেল আজিজের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রাজধানীর ৭৪ মহাখালীর অফিসে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ছিলেনও অফিসে। তবে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ায় রুবেল আজিজ কথা বলতে রাজি হননি।
 
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র ম. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী বেসরকারি ব্যাংকে একই পরিবারের দুইজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারেন না। সিটি ব্যাংকে পাঁচ পরিচালক থাকায় দুইজনে নামিয়ে আনতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা উচ্চ আদালতে রিট দাখিল করে নির্দেশন‍াটি স্থগিত রেখেছেন। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকও এ বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করা বা স্থগিত করে ব্যবসা করার কৌশল সিটি ব্যাংকের জন্য ভালো লক্ষণ নয় বলেও মত দেন মাহফুজুর রহমান।
 
ব্যাংকটির ১৫ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদের পাঁচজনই একই পরিবারের। তারা হলেন, চেয়ারম্যান রুবেল আজিজ, পরিচালক আজিজ আল কায়সার, তাবাসসুম কায়সার, আজিজ আল মাহমুদ ও সাইয়েদা সায়রিন আজিজ।
 
২০১৩ সালের ২১ জুনের সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনটি কার্যকর হয়েছে পরের বছর ২২ জুলাই থেকে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ ধারার (১০) উপ-ধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারিখাতের কোনো ব্যাংকে একই পরিবার থেকে একই সময়ে দুইজনের বেশি পরিচালক রাখা যাবে না। এই ধারার ১১ উপ-ধারায় আরও বলা আছে, পরিচালকদের পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে পদত্যাগের মাধ্যমে এই নির্দেশনা কার্যকর করতে হবে। তবে কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করতে ব্যর্থ হলে পরিচালনা পরিষদের সভায় কাকে বাদ দেওয়া হবে তা লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে।
 
প্রতিষ্ঠিত আইন কার্যকরে ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডকে সাত দিনের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচ পরিচালক থেকে দুইজনে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা পরিপালনের জন্য দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড প্রথমে দেড় মাস সময় চেয়ে আবেদন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের আবেদন নাকচ করে ১০ দিনের সময়ে ধার্য করে। দেড় মাসের সময় না পেয়ে উল্টো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই নির্দেশনার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান পরিচালক দীন মোহাম্মদ। আপিলের রায় না হওয়ায় এখনও তারা বহাল রয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলেন, বেসরকারিখাতের কয়েকটি ব্যাংক কখনোই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশকে আমলে নেয় না। নিজেদের ইচ্ছে মতোই চলে সব সময়। এদের মধ্যে অন্যতম সিটি ব্যাংক লিমিটেড।
 
যোগাযোগ করা হলে সিটি ব্যাংক লিমিটেডের জনসংযোগ প্রধান মাশরুর আরেফিন বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিত করে রাখা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
এসই/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।