ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অপ্রাপ্তবয়স্কদের ড্রাইভিং নিয়ে কারমুডির গবেষণা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
অপ্রাপ্তবয়স্কদের ড্রাইভিং নিয়ে কারমুডির গবেষণা ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: কৈশোরেই হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাওয়া কিশোর-কিশোরীদের জন্য যেন মহার্ঘ্য কোনো কিছু প‍াওয়ার মতো ঘটনা। আমাদের দেশের কিশোর-কিশোরীরা অনেক সময় লাইসেন্স ছাড়াই ড্রাইভিং সিটে বসতে সংকোচ করে না।

সম্প্রতি কিছু দুর্ঘটনার পর দেশে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ড্রাইভিং নিয়ে গবেষণা করেছে অনলাইন ভিত্তিক গাড়ি বিক্রির প্রতিষ্ঠান ‘কারমুডি’।

গবেষণায় দেখা গেছে কেবল ২০১৪ সালে দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষ। মৃত্যুর এই মিছিল দেখে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

দুর্ঘটনার তথ্য এবং কৈশোর মস্তিষ্ক উন্নয়নের স্নায়ুবিজ্ঞান পরীক্ষা ও গবেষণা করে বাংলাদেশে গাড়ি চালানোর আইনি বয়স কত হওয়া উচিত তা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে কারমুডি।

তাদের গবেষণায় দেখা যায়, বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে উদীয়মান দেশগুলোতে এবং তা থেকে ৫০ শতাংশ মৃত্যু এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে হয়। ফিলিপাইন ন্যাশনাল পুলিশ ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসের ভেতর ১১ হাজার সড়ক দুর্ঘটনা রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে ৮৭ দশমিক ২ শতাংশই চালকের ভুলে ঘটেছে। মিয়ানমারে ২০১৩ সালে ১৩ হাজার ৯০৭টি মৃত্যু বা আঘাতজনিত দুর্ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশে গাড়ি চালানোর আইনি বয়স ১৮। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে কিশোর চালকেরা প্রায়ই মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এমনকি বিপর্যয়ের হার ষোল বছরের চালকদের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ বেশি। আঠারো ও উনিশ বছরের চালকদের সঙ্গে তুলনা করলে এই হার বিশ বছরের ওপর চালকদের চেয়ে তিনগুণ বেশি।

ন্যাশনাল হেলথ ইন্সটিটিউটের (এনএইচআই) গবেষণায় দেখা গেছে, মানব মস্তিষ্কের যে অংশটি ঝুঁকি ও আবেগপ্রবণ আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, তা ২৫ বছর বয়সের আগে পুরোপুরি বিকশিতই হয় না। নিউক্লিয়াস একামবেন্স, যেটি তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণ করে, সেটি শৈশব থেকে বৃদ্ধি পায় ও কৈশোরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছিয়ে এরপর থেকে ছোট হতে থাকে।
 
কিশোর মস্তিস্কের জন্য আনন্দ ও তৃপ্তি ঝুঁকির চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান হয়ে পড়ে। কিশোর-কিশোরীদের ঝুঁকির আচরণে নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা আরও বেশি থাকে, তারা ড্রাইভিং বিষয়টি আরও হাল্কাভাবে নেয়। ফলে গাড়ি চালানোর সময় ফোন ব্যবহারের মতো কাজ ‍অনায়াসেই তারা করে থাকে। ড্রাইভিংয়ের সময় মোবাইলে মেসেজ করা বা ফোন করা বিপর্যয়ের ঝুঁকি তিনগুণ বাড়িয়ে তোলে।

কারমুডি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জোয়াও পেদরো প্রিন্সিপে জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীদের হাতে গাড়ির চাবি না দেওয়া রাস্তায় বিপর্যয়ের সমাধান না। বাবা-মা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গাড়ি চালাতে গিয়ে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপদ রাখার জন্য। নিরাপদ যানবাহনের পাশাপাশি মোবাইল ফোন ও সিটবেল্টের ব্যবহার সম্বন্ধে তাদের সতর্ক করা উচিত ও তাদের নিজেদের গাড়ি চালানোর পদ্ধতি নিয়েও সচেতন হওয়া উচিত। ছোট ছোট অভ্যাস উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর কারমুডি বর্তমানে বাংলাদেশ, ক্যামেরুন, কঙ্গো, ঘানা, ইন্দোনেশিয়া, আইভরি কোস্ট, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কাতার, রুয়ান্ডা, সৌদি আরব, সেনেগাল, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম ও জাম্বিয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অনলাইন এই প্ল্যাটফর্ম ক্রেতা, বিক্রেতা ও যানবাহন ব্যবসায়ীদের গাড়ি, মোটরসাইকেল ও বাণিজ্যিক যানবাহন খুঁজে পেতে সাহায্য করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৫
আরএম/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।