ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লোকসানি ছাতক সিমেন্ট

লাভজনক করতে আরো ৮৩১ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
লাভজনক করতে আরো ৮৩১ কোটি টাকা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র সিমেন্ট কারখানা ছাতক। পর্যাপ্ত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ৭৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ কারখানাটি কোনো বছরই লাভের মুখ দেখেনি।

লোকসানি প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক করতে এবার অর্থ ব্যয় করছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।

বিসিআইসি সূত্র জানায়, কারখানাটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে ৮৩১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। জুলাই ২০১৫ থেকে জুন ২০১৯ সাল মেয়াদে সরকারি তহবিল থেকে এ অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুরুতে কারখানাটির বছরে উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৬০ হাজার মেট্রিক টন। ১৯৫৮ সালে একটি ওয়েট লং কিলন স্থাপন করার পর কারখানার বা‍ৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ৩৫ হাজার থেকে দুই লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। বর্তমানে কাঁচামাল ও পুনর্বাসনের অভাবে কারখানাটির উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক মাত্র ২শ’ থেকে ৩শ’ মেট্রিক টন।

বর্তমানে দেশে ৬০টি সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। দেশে মোট সিমেন্টের চাহিদা ২২ দশমিক ৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন। ২০১৫ সালে দেশে সিমেন্ট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত সিমেন্ট দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে অর্থ ব্যয় প্রসঙ্গে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হাসনাত আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, কাঁচামালের সহজলভ্যতা ও বর্তমানে সিমেন্টের সঙ্গে ক্লিংকারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কারখানাটির আধুনিকায়ন করা হবে। এতে জ্বালানি খরচ কমে আসবে এবং ক্লিংকার উৎপাদনও বাড়বে।

তিনি আরও জানান, এর ফলে কারখানাটি দৈনিক ৫শ’ মেট্রিক টন থেকে বেড়ে দেড় হাজার মেট্রিক টন ক্লিংকার উৎপাদন করতে পারবে।

এছাড়াও উৎপাদিত ক্লিংকার থেকে যা অবশিষ্ট থাকবে তা বেসরকারি সিমেন্ট কারখানায় বিক্রিও করা যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, কারখানায় একটি নতুন জ্বালানি সাশ্রয়, পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক প্রযুক্তির ক্লিংকার ফ্যাক্টরি স্থাপন করা হবে। এতে বিদ্যমান সিমেন্ট ফ্যাক্টরির উৎপাদন ক্ষমতা নূন্যতম ১৫০ বছর পর্যন্ত ধরে রাখা যাবে বলে মনে করে বিসিআইসি।

ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে অবস্থিত দেশের একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ সিমেন্ট কারখানা। এটি ১৯৩৭ সালে আসাম বেঙ্গল সিমেন্ট কোম্পানি নামে ব্যক্তি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর কারখ‍ানাটি ১৯৬৬ সালে ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (ইপিআইডিসি) নিয়ন্ত্রণে আসে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথমে বাংলাদেশ মিনারেল ওয়েল গ্যাস করপোরেশনের (বিএমওজিসি) এবং ১৯৮২ সালের ১ জুলাই নিয়ন্ত্রণে আসে বিসিআইসি’র। এরপর থেকে কোনো বছরই লাভের মুখ দেখেনি প্রতিষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৫
এমআইএস/আরএইচএস/এএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।