ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মসুর ডালে ভাগ্য বদল!

বেলাল হোসেন, বগুড়া করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৬
মসুর ডালে ভাগ্য বদল! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: এবার আবাদ তালিকায় পরিবর্তন এনে উচ্চ ফলনশীল উফসি জাতের মসুর ডাল যুক্ত করেছেন বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। ফলন বেশ ভালো এবং দাম অন্য কৃষি ফসলের চেয়ে বেশি পাওয়ায় এদিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছেন তারা।



আর এ মসুর ডালেই ভাগ্য বদল ঘটছে তাদের।

বুধবার (১৬ মার্চ) বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনই তথ্য ওঠে আসে।
 
কৃষকরা জানান, এ জাতের মসুর ডালের চাষ পদ্ধতিও অনেকটা সহজ। কার্তিক মাসের শেষ দিকে জমিতে ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। পঞ্চাশ দিনের মাথায় ফুল আসতে শুরু করে। আর নব্বই দিনের মাথায় গাছ থেকে ডাল ওঠানো হয়।

তবে বীজ রোপনের আগে জমির মাটি পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিতে হয়। সার ও ওষুধের তেমন একটা প্রয়োজন হয় না। বাড়তি সেচেরও দরকার পড়ে না। বীজ ও পরিশ্রমের দামই এ ফসলের প্রধান ব্যয়। মোট কথা স্বল্প ব্যয়ে জমি থেকে ঘরে চলে আসে মসুর ডাল।
 
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, চরাঞ্চলের কৃষকরা চর এলাকার জমিতে বেশি মসুর ডাল চাষ করে থাকেন। কারণ, তাদের কাছে এটা এক ধরনের বাড়তি ফসল। স্বল্প খরচে এ ফসল চাষ করে অল্প সময়ের মধ্যেই ডাল ঘরে ওঠানো যায়। যা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি টাকাও আয় করেন তারা।

তবে চরাঞ্চল ছাড়াও এখন অন্য অঞ্চলের কৃষকরাও মসুর ডাল চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ভিটা ও উঁচু জমিতে তারা উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর ডাল চাষ করেছেন।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, কৃষাণ-কৃষাণীরা এখন ফসল ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  

কৃষক আশরাফ আলী বাংলানিউজকে জানান, তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর ডাল লাগিয়েছিলেন। প্রতি বিঘায় তার ফলন হয়েছে ৩ মণ হারে। গেল বছরও এ ফসল চাষ করেছিলেন তিনি। তবে এবার ফলন হয়েছে দ্বিগুণ। দামও গতবারের চেয়ে বেশি।

নাসির উদ্দিন, ওয়াহেদ, আব্দুল গফুরসহ আরও কয়েকজন কৃষক বাংলানিউজকে জানান, মসুর ডাল চাষে তেমন বেগ পেতে হয় না। তবে অনেকটা সন্তানের মতো লালন-পালন করতে হয়। কুয়াশা বা রোদ এ ফসলের ওপর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে না।   ফলে গাছের ফুলও নষ্ট হয় না। এসব কারণে ফসলের দ্বিগুণ ফলন পাওয়া যায় বলেও তারা জানান।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে উফসি জাতের মসুর ডাল চাষ করা হয়েছে। আর ডাল চাষে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের ব্যাপকভাবে উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে যাচ্ছেন।   ভালো বীজ সরবরাহের সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তাও দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগগুলো।
 
তিনি আরো জানান, এ ফসল ঘরে ওঠানোর পর কৃষক সেই জমিতে রোপা আউশ মৌসুমের ফসল চাষ করতে পারেন। পরে রোপা আমন মৌসুমের ফসল চাষ করতেও কোনো প্রভাব পড়ে না। যথাসময়ে কৃষক তাদের জমিতে এসব মৌসুমের ফসল চাষ করতে পারায় তারা বাড়তি ফসল হিসেবে মসুর ডাল চাষ করেন বলেও জানান কৃষি অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
 
বাংলাদেশ সময়  ০৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৬
এমবিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।