ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গভীর সমুদ্রবন্দর যেখানেই হোক, নির্মাণে সহায়তা করতে চায় চীন

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
গভীর সমুদ্রবন্দর যেখানেই হোক, নির্মাণে সহায়তা করতে চায় চীন ছবি: শাকিল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সোনাদিয়া কিংবা পায়রা যেখানেই গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হোক, যারাই করুক, চীন সেখানে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এমনকি অন্যদেশের সঙ্গে মিলে সমুদ্রবন্দর নির্মানেও আপত্তি নেই দেশটির।

  এছাড়া দেশটি বাংলাদেশে ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানিয়েছেন  বাংলাদেশ নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়ান।

সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের  সংগঠন ডিক্যাব আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ এসব কথা বলেন তিনি।

অাগামীতে বাংলাদেশকে চীনের সামরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।

মা মিং কিয়ান বলেন, বঙ্গোপসাগরে এখন পর্যন্ত কোনো গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হয়নি। একারণে আমদানি রপ্তানির জন্য সিংগাপুর কিংবা শ্রীলংকার উপর নির্ভর করতে হয় বাংলাদেশকে। যদি এখানে কোন গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ হয়, তাহলে সেটা বাংলাদেশেরই থাকবে। আমরা শুধু এর নির্মান বা পরিচালনায় যুক্ত হতে চাই। সেক্ষেত্রে অন্য বিদেশি সহযোগীর সঙ্গে সঙ্গে কাজ করতেও কোনো আপত্তি নেই।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চীন ব্যাপকহারে বিনিয়োগ করেছে।   ‘এক বন্ধনি একই রাস্তা’  এ নীতিতে এ অঞ্চলের উন্নয়নে শরিক হতে চায় চীন।

তিনি বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ একটি সুবিধাজনক অঞ্চলে অবস্থান করছে।   বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। গত দুই-তিন বছরে চীনা বিনিয়োগ কম থাকলেও চলতি বছর প্রচুর বিনিয়োগকারী এ দেশে আসবে। বিশেষ করে জ্বালানিখাত, সরকারি প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণ ও তৈরি পোশাকখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী চীন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে প্রচণ্ড বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। আগামী ৫ বছরে চীন বিদেশে থেকে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করবে। এ পণ্য তৈরি করে চীনে রফতানি করলে বাংলাদেশ লাভবান হবে এবং বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমে আসবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।

মা মিং কিয়ান বলেন, বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে যেমন ২০২১ সালকে টার্গেট ধরেছে, চীনও তেমনি ওই বছরটিকে একইভাবে টার্গেট ধরেছে। কারণ, ওই বছরে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর পূর্ণ হবে।

তিনি বলেন,  ঐতিহাসিক দিক দিয়েও বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক নিবিড়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জন করতে হলে চীনে যাও’। আবার আমাদের দেশে প্রচলিত আছে ‘জ্ঞান অর্জন করতে হলে বাংলা যাও’।

এ বাংলা থেকে হাজার বছর আগে অতীশ দীপঙ্কর চীনে গিয়ে জ্ঞান বিতরণ করে  এসেছিলেন। তাছাড়া এ অঞ্চল থেকেই  আমরা গণিত, দর্শন ও বিশেষ করে গৌতম বুদ্ধের বাণীর অমূল্য শিক্ষা অর্জন করে এসেছি।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি কোনো দেশের একক সমস্যা নয়। এটি এখন বিশ্বায়িত সংকট। একটি দেশ যতো শক্তিশালীই হোক, সে একা এটির মোকাবেলা করতে পারবে না। তেমনি একটি দেশ যতোই গরিব হোক, এর আক্রমণ থেকে রেহাই পাবে না। সকলে মিলেই এটির মোকাবেলা করতে হবে।

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যার পর পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশে ‘আইএস’-এর অবস্থান রয়েছে বলে যে তথ্য দিয়েছে, তার তদন্ত না করেই চীন এ ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে না বলেও জানান দেশটির রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়ান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডিক্যাবের সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টি ও সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৬
জেপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।