ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ পৌষ ১৪৩১, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পিংক সিটি থেকে বিদায় হয়েছে আগোরা ‘আপদ’

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
পিংক সিটি থেকে বিদায় হয়েছে আগোরা ‘আপদ’ ছবি: শাকিল-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নষ্ট, পচা মাছ-মাংস, ফরমালিনযুক্ত শাক-সবজি ও ফল বিক্রি এবং চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতা-সাধারণের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ মাথায় নিয়ে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-২ থেকে বছর দেড়েক আগেই বিদায় হয়েছে রিটেইল চেইন সুপার শপ আগোরা।
 
গুলশান-২ এর প্রাইম লোকেশনে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শপিং কমপ্লেক্স গুলশান পিংক সিটির বেসমেন্টের যে স্পেসটিতে আগোরা সুপার শপ ছিল সেখানে এখন টপটেন ফেব্রিক্স অ্যান্ড টেইলার্স, ইনফিনিটি ও রিচম্যান’র আউটলেট।


 
পিংক সিটির বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী-কর্মকর্তা, মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য-সামগ্রী সংরক্ষণ, ক্রেতা সাধারণের কাছে বিক্রি, ফরমালিনযুক্ত সবজি ও ফল বিক্রি এবং নষ্ট ও পচা মাছ-মাংস বিক্রির অভিযোগে বেশ কয়েকবার আগোরা সুপার শপকে জরিমানা করা হয়।
 
তাছাড়া সাধারণ ক্রেতারাও মাঝে-মধ্যে আগোরার বিরুদ্ধে পচা মাছ-মাংস পরিবেশনের অভিযোগ তুলতো। এ নিয়ে মার্কেটের পরিবেশ ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতো। ফলে মার্কেট কর্তৃপক্ষ আগোরার সঙ্গে ভাড়ার চুক্তি বাতিল করে।
 
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝে মধ্যেই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্যের কম মূল্য জাহির করা হতো। কিন্তু ক্রেতারা কিনতে এলেই দেওয়া হতো জটিল শর্ত। বিজ্ঞাপনে থাকত নাজিরশাইল চাউল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা। কিনতে এলে বলা হতো, একসঙ্গে ২০ কেজি নিলে এই সুবিধাটা পাওয়া যাবে।
 
তাছাড়া যৌক্তিক কোনো কারণ থাকলে বিক্রিত মাল ফেরত নেওয়ার ঘোষণা দিলেও গুলশান পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সের আগোরা কোনো দিনও কাস্টমারের কাছ থেকে বিক্রিত পণ্য ফেরত নিতো না। এ নিয়ে প্রায়ই বিক্রয় প্রতিনিধি ও শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হতো ক্রেতাদের।
 
কথনো কখনো ইন্ডিয়ান গরু ও পাকিস্তানি মুরগিকে দেশি গরুর মাংস ও দেশি মুরগি বলে চালিয়ে দিতো এ চেইন সুপার শপটি।
 
এভাবে ক্রমাগত ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে প্রতারণা অব্যাহত থাকায় এক সময় আগোরা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন গুলশান-বনানীর অভিজাত বাসিন্দারা। শেষের দিকে এসে পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সের আগোরার আউলেটটি ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়েই এখান থেকে বিদায় নেয় আগোরা।
 
দীর্ঘদিন পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করে আসছেন এমন একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, আগোরা নিয়ে আমরা খুব ঝামেলায় ছিলাম। প্রায় প্রতিদিনই কোনো কোনো ক্যাঁচাল লেগেই থাকতো। বছর দেড়েক আগে আগোরা এখান থেকে চলে গেছে। আমাদের মনে হচ্ছে ‘আপদ’ গেছে, বেঁচেছি।
 
এদিকে বছর দেড়েক আগে পিংক সিটি থেকে আগোরা বিদায় নিলেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে এখনো দেখাচ্ছে গুলশান-২ এ তাদের আউটলেট আছে। এ বিষয়টিকেও সাধারণ মানুষকে হয়রানি হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন ‘গুলশানের অভিজাত এলাকায় নিজেদের একাধিক আউটলেট রয়েছে’ এমন বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্যই নিজেদের ওয়েবসাইটে পিংক সিটি আউটলেটি’র অবস্থান ঝুলিয়ে রেখেছে।
 
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে আগোরার কোনো কর্মকর্তা মিডিয়াতে কথা বলতে রাজি হননি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এজেড/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।