ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভারতীয় গরুর ভয়ে ব্যবসায়ীরা

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
ভারতীয় গরুর ভয়ে ব্যবসায়ীরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কি ভারতীয় গরু প্রবেশ করবে সীমান্ত গলে? ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কি ব্যবসায়ীদের গরু আনতে দেবে? ভারত সরকার কি এ বিষয়ে কিছু নতুন করে ভাবছে? ঢাকার স্থায়ী পশুরহাট গাবতলির গরু ব্যবসায়ীদের মাথায় সারাক্ষণই ঘুরপাক খাচ্ছে এসব প্রশ্ন। তারা ধারণা করছেন, কোরবানি উপলক্ষে ভারত থেকে প্রচুর সংখ্যক গরু আসবে বাংলাদেশে।

বৈধভাবে গরু আমদানির সুযোগ না থাকায় অবধৈ পন্থায়ই আসবে এসব গরু। এ সময় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একশ্রেণীর ‘নজরানালোভী’ সদস্য গরু ব্যবসায়ীদের ঠিকই ছাড় দেবেন---এমনটাই শুনেছেন তারা।
 
গাবতলি পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেল, এখনো দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত হাট থেকে কোরবানির পশু আসা শুরু হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। চলছে কোরবানির হাটকে মাথায় রেখে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের নানান প্রস্তুতি। স্বাভাবিক সময়ে যতো সংখ্যক ভারতীয় গরু গাবতলির হাটে আসে, তারও চেয়ে বেশি সংখ্যক গরুই চোখে পড়ে হাট ঘুরে। সেই সঙ্গে আছে নানা জাতের ছাগল, উট, দুম্বা, ভেড়া ইত্যাদি।
 
এবারের কোরবানির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে গরু ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতীয় গরুর ভয়েই এখনো দেশের হাটগুলো থেকে দেশি গরু কিনছেন না তারা। লোকসানের ভয়েই এবার ‘ধীরে চলো’ নীতি তাদের।
 
গরু ব্যবসায়ী পলাশ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘আমরা খবর পাচ্ছি বর্ডারের ওপারে প্রচুর গরু জড়ো করছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, বিহার থেকে এসব গরু এনে জড়ো করা হচ্ছে। কোরবানি উপলক্ষ্যে অঘোষিতভাবে ভারতীয় গরু ঢুকবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যেও এ বিষয়ে অলিখিত বনিবনা আছে বলে লোকমুখে জানতে পেরেছি। ’’
 
তিনি বলেন, ‘‘সব কয়টা ঘাট দিয়ে যদি সত্যিই তিনদিন গরু আনার সুযোগ পাওয়া যায় তাহলে মোট চাহিদার অর্ধেকের বেশি গরু আনা যাবে। এতে অবিক্রিত থেকে যাবে দেশি গরু। অন্যদিকে দেশি গরুর দাম স্থানীয়ভাবে অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় দেশি খামারি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বেন। ’’
 
কুষ্টিয়া থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, ‘‘আমরা অন্তত আরো এক সপ্তাহ অপেক্ষা করবো হাটে গরু আনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। কেননা, ভারতীয় গরু আসছে না-- এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারলেই কেবল বিভিন্ন হাট ঘুরে দেশি গরু কিনতে শুরু করবেন ব্যবসাযীরা। আর ভারতীয় গরু এসে পড়লে সীমান্তের খাটালগুলো থেকেই গরু আনা হবে। ’’
 
তবে ব্যবসায়ী তাপস জানান, কোরবানি উপলক্ষ্যে গরুর ব্যবসার ফরম্যাটটাই গেছে বদলে। আগের মতো সবাই হাটে-হাটে গরু বিক্রি করতে বা কিনতে এখন আর আসে না। এখন অনলাইনেও গরু বিক্রি করেন অনেক খামারিরা। আবার শহরের আনাচে কানাচেও গড়ে উঠেছে অনেক খামার। সেখান থেকেই হাট ছাড়া গরুর বিক্রি হচ্ছে। ’’
 
তবে তাই বলে তো আর হাত গুটিয়ে বসে নেই সব ব্যবসায়ী। এরই মধ্যে মিরপুরের ডিপজল এবং মোহাম্মদপুরের ইমরানের খামারের উট, দুম্বা, ভুটিয়া-গরু এসেছে গাবতলির হাটে। বড় সাইজের উটের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা আর ছোট সাইজের উট আট লাখ টাকা। ৭০ কেজি ওজনের দুম্বার দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। সবচেয়ে বড় ৩০ কেজি ওজনের খাসীর দাম চাওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
আরএম/জেএম

**
গাবতলি হাটে সবার নজরে হরিণ ছাপের গরু!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।